উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের কারামুক্তি চেয়ে তার আইনজীবীদের করা আবেদন নাকচ করেছে ব্রিটিশ আদালত।
জামিনের পক্ষে বুধবার আইনজীবীরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ না করতে ব্রিটিশ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের আপিল শুনানি শুরু না হওয়ায় ব্রিটিশ কারাগার থেকে জামিন পেতে পারেন অ্যাসাঞ্জ।
ডিস্ট্রিক্ট জাজ ভ্যানেসা বারাইতজার আদেশে বলেন, অ্যাসাঞ্জের পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই তাকে জামিন দেয়া যাবে না। আপিল শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অ্যাসাঞ্জকে বেলমার্শ কারাগারেই থাকতে হবে।
অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে লন্ডনের আদালতে সোমবার শুনানি হয়। এদিন বিচারক জানান, মার্কিন প্রসিকিউটররা অ্যাসাঞ্জের প্রত্যর্পণের উপযুক্ত কারণ দর্শাতে পারলেও তার আত্মহত্যা ঠেকানোর ক্ষমতা নেই তাদের। অ্যাসাঞ্জের মানসিক অবস্থা বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ হবে নিপীড়নমূলক।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই আপিল শুনানি এখনও শুরু হয়নি।
অ্যাসাঞ্জের পক্ষে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন তার বাগ্দত্তা স্টেলা মরিস। ছবি: এএফপি
২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয়ে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ। ২০১৯ সালে এপ্রিলে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার হলে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর।
জামিনের শর্ত ভাঙার অভিযোগে ব্রিটিশ আদালতে দোষী প্রমাণিত হন তিনি। পাঠানো হয় বেলমার্শ কারাগারে। এই সময়ে সরকারি কম্পিউটার হ্যাক ও গুপ্তচর আইন লঙ্ঘনসহ ১৮টি অভিযোগ এনে অ্যাসাঞ্জের বিচার করতে আবেদন করে যুক্তরাষ্ট্র।
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন।
ওই সব নথির মধ্যে আফগান যুদ্ধ সম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরও ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ফাঁস করা তথ্যে তাদের দেশের আইন ও জীবন হুমকিতে পড়েছে।
অ্যাসাঞ্জের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের সব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।