হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৫৩ গণতন্ত্রপন্থি কর্মী ও আইনপ্রণেতাকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
আইনসভার নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে গত বছর গণতন্ত্রপন্থিরা স্বতন্ত্রভাবে প্রাইমারি ভোটের আয়োজন করেছিলেন। সেই প্রাইমারিতে অংশ নেয়ার জেরে বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বছরের জুলাইয়ে হংকংয়ের বিরোধী দলগুলোর জোট ওই প্রাইমারির আয়োজন করেছিল। তবে করোনার কারণে আইনসভা নির্বাচন পিছিয়ে চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ঠিক করা হয়।
অভিযানের জন্য বুধবার এক হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। বিরোধী নেতাদের বিভিন্ন কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সিভিক পার্টির তিন জন, ডেমোক্রেটিক পার্টির সাত জন, বিরোধী দলের ২১ ডিস্ট্রিক কাউন্সিলর, প্রাইমারি প্রার্থী ১৩ জন, দুই শিক্ষাবিদ ও যুক্তরাষ্ট্রের এক মানবাধিকার কর্মীসহ ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেন তারা।
এই আটক অভিযানকে সমর্থন জানিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চং ইয়ং জানিয়েছেন, চীনের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বিদেশি শক্তি সক্রিয়। তাদের ঠেকাতেই এই আটক অভিযান।
চীনের মনোনীত ক্যারি ল্যাম সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগে গত বছরের শুরু থেকেই অঞ্চলটির স্বাধীনতাকামীরা সরকারের উচ্ছেদের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। আর তাতে সমর্থন দেয় পশ্চিমা দেশগুলো।
বিক্ষোভ দমাতে কঠোর অবস্থান নেয় চীন সরকার। গত বছরের জুনে বিতর্কিত এক আইন পাস করে বেইজিং।
‘জাতীয় নিরাপত্তা আইন’ অনুযায়ী বিচ্ছিন্নতাবাদ, কেন্দ্রীয় সরকার পতন, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলে এমন কর্মকাণ্ড অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এ আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকেই অঞ্চলে চীনবিরোধীদের ধরপাকড় শুরু হয়। এতোদিন বিচ্ছিন্নভাবে ধরপাকড় চললেও এবারই প্রথম বড় পরিসরে আটক অভিযান চালানো হলো।
আটকের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এ ধরনের আচরণকে বাকস্বাধীনতার স্পষ্ট লঙ্ঘন বলছে তারা। নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
হংকং চীনের আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। আগে অঞ্চলটি যুক্তরাজ্যের একটি উপনিবেশ ছিল। চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের হাতে ফিরিয়ে দেয়া হয়। সেই চুক্তিতে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার কথা ছিল।