সৌদি আরব সমর্থিত ইয়েমেনের নতুন সরকারের মন্ত্রীরা এডেন বিমানবন্দরে পা রাখা মাত্রই যে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে তাতে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। নিহতের সংখ্যা এর মধ্যে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ জনে।
হাসপাতাল ও সরকারি সূত্রগুলো বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, বুধবারের এই হামলায় আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি। তবে সরকারের মন্ত্রীদের কেউই হতাহত হননি।
ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রস (আইসিআরসি) জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তাদের একজন কর্মী রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিন কর্মী।
আইসিআরসির অপারেশন্স পরিচালক ডমিনিক স্টিলহার্ট বলেন, ‘ইয়েমেনি জনগণ গত পাঁচ বছর ধরে দুর্বিষহ কষ্ট সহ্য করেছে। এই দিনটা তাদের দুঃখ আরও বাড়িয়ে দিল।’
বিস্ফোরণের পর পরই বিমানবন্দরের টার্মিনালে ধোঁয়ার কুন্ডলিতে ছেয়ে যায়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ধ্বংসাবশেষ। আহতদের উদ্ধারে যখন অন্যরা ছুটে যায় তখনই ঘটে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ।
হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই হামলার দায়দায়িত্ব স্বীকার করেনি কেউ।
এএফপির হাতে পাওয়া একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, যখন একটি মিসাইল বিমানবন্দরের বিমান পার্কিং এলাকায় আঘাত হানে তখন সেখানে ব্যাপক জনসমাগম ছিল।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি, ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ আল-মাশেকে হামলা চালাতে যাওয়া একটি হুতি ড্রোনকে তারা ভূপাতিত করেছে।
ইয়েমেনে গত পাঁচ বছরের যুদ্ধে প্রাণ গেছে হাজার হাজার মানুষের, বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক। জাতিসংঘের দৃষ্টিতে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে আছে ইয়েমেন।
গত ১৮ ডিসেম্বর ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার ও দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সম্মিলতিভাবে ক্ষমতা ভাগাভাগির ভিত্তিতে একটি মন্ত্রীসভা গঠন করে। তারা সানা ও উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণে থাকা হুতি বিদ্রোহীদের বিপক্ষে জোট বলে পরিচিত।
বরাবরের মতো এই হামলার জন্যও হুতি বিদ্রোহীদের দুষছেন ইয়েমেনের তথ্যমন্ত্রী মোয়াম্মার আল-ইরিয়ানি। টুইটারে তিনি লিখেছেন- ‘আমরা আপনাদের নিশ্চিত করে জানাচ্ছি, ইরান মদদপুষ্ট এই কাপুরুষোচিত হামলা দেশের প্রতি কর্তব্য পালনে আমাদের রুখতে পারবে না।’
এই হামলার জন্য হুতিদের দায়ী করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ বিন মুবারকও।
আর প্রেসিডেন্ট আবেদ্রাবো মনসুর হাদি বলেছেন, ‘ইরান সমর্থনপুষ্ট হুতি বিদ্রোহী ও চরমপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো আইনগত সরকারকে দায়িত্ব পালন থেকে হটাতে পারবে না।’
এদিকে এ ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন ইয়েমেন সরকারের মুখপাত্র রাজিহ বাদি। এএফপিকে তিনি বলেন, ‘তদন্তের আগে এই হামলার জন্য কাউকে দোষারূপ করাটা আগেভাগে মন্তব্য হয়ে যাবে।’