সৌদি আরবে এক নারী অধিকার কর্মীকে পাঁচ বছর আট মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, ৩১ বছর বয়সী লুজাইন আল হাথলোর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নের অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে।
লুজাইন আল হাথলো আড়াই বছর ধরে কারাগারে আছেন। সৌদি আরবের জন্য হুমকি এমন কিছু সংস্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে লুজাইন এবং তার কয়েকজন সহকর্মীকে ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার করে দেশটির পুলিশ।
সে সময় লুজাইনকে ১০ বছর ১০ মাসের সাজা দেয় আদালত।
দেশ-বিদেশে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবাদ আর সমালোচনার মুখে মামলাটি স্পেশালাইজড ক্রিমিন্যাল কোর্টে স্থানান্তর হয়।
লুজাইনের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার সময় সোমবার বিচারক জানান, লুজাইনের বিরুদ্ধে আনা সব অপরাধ প্রমাণ হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আপিলের সময় পাবেন তিনি।
দুই বছর ১০ মাস জেলে থাকায় নতুন দণ্ড থেকে কাটা যাবে এই সময়।
লুজাইন ও তার পরিবার শুরু থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এমনকি কারাগারে লুজাইনকে নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করে তারা। যদিও আদালত এসব আমলে নেয় নি।
দুর্ভাগা লুজাইন:
সৌদি আরবে নারীরা কঠোর বিধিনিষেধে জীবন যাপন করতে হয়। পুরুষশাসিত সৌদি সমাজ ব্যবস্থা এতটায় কঠিন যে প্রচলিত এই নিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলাদের ওপর নেমে আসতো ভয়াবহ শাস্তি।
নিশ্চিত সাজা জেনেও, নারী অধিকার নিয়ে আওয়াজ তোলেন লুজাইন আল হাথলোসহ বেশ কয়েকজন নারী অধিকারকর্মী। দাবি জানায়, নারীদের গাড়ি চালানোর সুযোগ দিতে হবে।
সৌদি সিংহাসনের উত্তরসুরি মনোনীত হওয়ার পর, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কট্টরপন্থা থেকে সরে আসেন। নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন যুবরাজ।
নিষেধাজ্ঞা তোলার মাত্র এক সপ্তাহ আগে গ্রেপ্তার হন লুজাইন।
দাবি মেনে নেয়ায় অনেকেই ভেবেছিলেন শিগগিরই মুক্তি পাচ্ছেন লুজাইন। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেয় গাড়ি চালানোর অনুমতির সঙ্গে লুজাইনের বিচারের কোনো সম্পর্ক নেই।
শুধু গাড়ি চালানো নয়, যুবরাজ সালমান ক্ষমতায় এসে নারীদের স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার অনুমতি দেন। বিদেশ ভ্রমনেও এখন থেকে পুরুষ সদস্যদের অনুমতি নিতে হয় না তাদের। সেনাবাহিনীতেও যোগ দিতে পারছেন সৌদি নারীরা।