কবে কোন টিকা প্রয়োগের অনুমতি পাবে তা এখনো অজানা। এরই মধ্যে ব্রিটেনে করোনার নতুন প্রকরণ নিয়ে আবার আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছে। আর এই আবহে সোমবার ভারতের চার রাজ্যে শুরু হয়েছে করোনা টিকার ড্রাই রান।
এর অর্থ হলো টিকা সংরক্ষণ থেকে তা প্রত্যন্ত এলাকায় নিয়ে যাওয়াসহ সব কিছু খতিয়ে দেখা। টিকা প্রস্তুত ও প্রয়োগের সময়ের ব্যবধানে তা ঠিক থাকছে কি না তাও দেখা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য আসাম, গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশ ও পাঞ্জাব রাজ্যে এই ড্রাই রান চলবে। এই চার রাজ্যের দুটি করে জেলায় সোমবার ও মঙ্গলবার করোনা টিকার পরীক্ষামূলক কর্মসূচি চালানো হবে।
চার রাজ্যই তাদের পরীক্ষালব্ধ প্রতিবেদন পাঠাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ে। অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা, পাঞ্জাবের লুধিয়ানা, শহিদ ভগৎ সিংহ নগর, আসামের শোণিতপুর, নলবাড়িতে ও গুজরাতের আহমেদাবাদে চলবে করোনা টিকার ড্রাই রান।
অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যকর্মীরদের টিকার ড্রাই রানের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে। জেলা হাসপাতাল, শহরাঞ্চল, গ্রামীণ এলাকায় টিকার এই ট্রায়াল চলবে। টিকা সংরক্ষণের জন্য হিমঘর ও বণ্টনের জন্য পরিবহনের কী ব্যবস্থা রয়েছে, তা চার রাজ্যেই খতিয়ে দেখবেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আধিকারিক ও টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা।
চারটি মূল পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে এই ড্রাই রান চলবে। কেন্দ্রীয় সরকার তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। প্রতিটি জেলার নিকটস্থ সংরক্ষণ স্থান থেকে ১০০ জন সুবিধাভোগীর জন্য ডামি ভ্যাকসিন ডিপো থেকে বেরোবে। ভ্যাকসিনের যাত্রাপথ ট্র্যাক করা হবে। নামসহ সুবিধাভোগীদের কাছে আগাম এসএমএস পাঠানো হবে এবং টিকা দেয়ার সময় প্রত্যেক সুবিধাভোগীকে শট দেয়ার পরে ৩০ মিনিটের জন্য বসতে হবে। যদি কোনো প্রতিকূল ঘটনা ঘটে, তা এর পরিচালনা কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে ট্র্যাক করা হবে।
জানা গেছে, গোটা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে তারা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেবেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। সেই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী কর্মসূচি নেয়া হবে। নতুন বছরের শুরু থেকেই করোনার টিকা দেয়ার কাজ শুরু হয়ে যাওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। সেই মতো তৎপরতা নেয়া আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল অফিসার, ভ্যাক্সিনেটর, সুপারভাইজার, ডেটা ম্যানেজার, আশাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ শেষ হয়েছে।
প্রথম ধাপে অন্তত ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হবে বলে কেন্দ্রের পরিকল্পনা। জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির মতে, প্রায় ১ কোটি স্বাস্থ্যকর্মী ও করোনার বিরুদ্ধে সামনে থেকে লড়াই চালাচ্ছেন, এমন প্রায় ২ কোটি কর্মী ও তার সঙ্গে নির্দিষ্ট বয়সের ২৭ কোটি মানুষকে প্রথম ধাপে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।