করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে প্রতিবেদন করার অভিযোগে চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছে চীনের এক নারী নাগরিক সাংবাদিকের।
সাংহাইয়ের একটি আদালত সোমবার সকালে সাংবাদিক ঝেং ঝেনকে এ দণ্ড দেয় বলে এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
করোনা মহামারির বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির শুরুতে প্রতিবেদনের মাধ্যমে ‘বিবাদ সৃষ্টি ও উত্তেজনা উসকানোর’ অভিযোগে সাবেক আইনজীবী ঝেনকে দণ্ডিত করে সাংহাই পুডং নিউ ডিস্ট্রিক্ট পিপলস কোর্ট।
আদালতের বাইরে ঝেনের আইনজীবী রেন কোয়ানিউ বলেন, ‘রায় ঘোষণার সময় ঝেনকে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল। তার মা এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন।’
মে মাসে ৩৭ বছর বয়সী ঝেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জুন থেকে কারাগারে তিনি অনশন শুরু করেন। পরে তাকে জোর করে নাক দিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়।
রায়ের আগে রেন বলেন, “গত সপ্তাহে ঝেন আমাকে বলেন, ‘তারা যদি কঠোর শাস্তি দেয়, তাহলে আমি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত খাবার খাব না।’ জেলেই মৃত্যু হবে বলে মনে করছেন ঝেন।”
ঝেনের আরেক আইনজীবী বলেন, তার স্বাস্থ্য অবনতির দিকে। মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা ও পেট ব্যথায় ভুগছেন ঝেন।
করোনার উৎসস্থল তদন্তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি বিশেষজ্ঞ দল চীনে পৌঁছার কথা। এর কয়েক সপ্তাহ আগেই এ রায় ঘোষণা করা হলো।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চীনের উহান শহরের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে করা ঝেনের সরাসরি প্রতিবেদন ও প্রবন্ধ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যা দেশটির কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে।
চায়নিজ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স (সিএইচআরডি) নামের একটি বেসরকারি সংস্থার বরাতে বিবিসি জানায়, ঝেনের প্রতিবেদনে অন্য স্বাধীন সাংবাদিকদের গ্রেপ্তারের বিষয় উল্লেখ ছিল। এ ছাড়া জবাবদিহিতা চাওয়া ভুক্তভোগীদের পরিবারকে হয়রানির বিষয়টিও তার প্রতিবেদনে উঠে আসে।
সিএইচআরডির পক্ষ থেকে বলা হয়, ফেব্রুয়ারিতে করোনা মহামারি নিয়ে স্বাধীনভাবে প্রতিবেদনের উদ্দেশে উহানে পৌঁছান ঝেন। সেখানে ১৪ মে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরের দিন সাংহাইয়ের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে বলে জানা যায়।