যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের ইন্ডিয়ানাপলিস শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সুসান মুর নামের কৃষ্ণাঙ্গ এক চিকিৎসক। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে থেমে থেমে নিজের কথা ভিডিওতে বলছিলেন তিনি।
৪ ডিসেম্বর ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে সুসান বলেন, আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অন্য আমেরিকান নাগরিকদের মতোই নিম্নমানের চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন তিনি। এক জন চিকিৎসক হিসেবে আলাদা কোনো সুবিধা তাকে দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, করোনার ওষুধ রেমডিসিভিরের মাত্র দুুটি ডোজ দেয়ার পর হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দিতে চেয়েছিলেন চিকিৎসকরা। ওষুধটির প্রয়োজন নেই বলেও তাকে জানানো হয়।
কিন্তু সিটি স্ক্যানের রিপোর্টে তার গলা ও ফুসফুসে সংক্রমণ ও প্রদাহ ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা তখন ব্যথানাশক ওষুধ দিতে রাজি হলে তাকে আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় ওই ওষুধের জন্য। দেরির বিষয়টি জানানো হলে এক নার্স তার ওপর ক্ষেপে যান।
সুসান বলেন, ‘কৃষ্ণাঙ্গরা এভাবেই মরে। আপনি তাদের ঘরে ফেরত পাঠালেন, অথচ তারা জানে না কীভাবে নিজেদের খেয়াল রাখতে হয়।’
সুসানের শ্বেতাঙ্গ চিকিৎসক বিশ্বাস করেননি রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। ওই চিকিৎসক যে আরেক চিকিৎসকের চিকিৎসা করছেন, তা তার মাথাতেই ছিল না।
সুসান বলেন, ‘বিধ্বস্ত হয়ে পড়ি আমি। তিনি আকার-ইঙ্গিতে বোঝাতে চেয়েছেন, আমি মাদকাসক্ত। আমি চিকিৎসক, তা তিনি জানতেন। আমি মাদকাসক্ত নই। শ্বেতাঙ্গ হলে আমার সঙ্গে এমন আচরণ করা হতো না।’
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি সপ্তাহে ৫২ বছর বয়সী সুসানের মৃত্যু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গরা করোনায় ব্যাপকভাবে আক্রান্ত। কিন্তু চিকিৎসা সেবা নিতে গেলে জাতিগত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা।
সুসানের মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে একই অঙ্গরাজ্যের আরেক কৃষ্ণাঙ্গ চিকিৎসক চেনিয়েস ওয়ালেস সন্তান প্রসবের অল্প কিছুক্ষণ পরই মারা যান।
সুসানের চিকিৎসার বিস্তারিত তথ্য জানাতে রাজি হয়নি ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি হেলথ সিস্টেম। তবে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘সব কর্মীকে নতুন বর্ণবাদবিরোধী, পক্ষপাতহীন ও শিষ্টাচারবিষয়ক প্রশিক্ষণ’ দেয়া হবে।