যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের জমানায়ও ইসরায়েলকে মেনে নিয়েছে চারটি মুসলিম দেশ। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির মেয়াদ আর এক মাস বাকি থাকতে পঞ্চম মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টায় ইহুদি রাষ্ট্রটি।
পঞ্চম এই দেশটি কোনটি, সেটি এখনও প্রকাশ করেনি তেলআবিব (ইসরায়েলের রাজধানী)।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকছেন আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফলে ইসরায়েলের হাতে সময় আছে আর এক মাসেরও কম।
ইসরায়েলের টেলিভিশন ইউনেট টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির রিজিওন্যাল কো-অপারেশন মন্ত্রী ওফির আকুঅনিস বলেন, ‘আমরা কাজ করছি।’
দেশটির নাম প্রকাশ না করে তিনি বলেন, ‘চুক্তি সই হোক, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রই ঘোষণা দেবে।’
ইসরায়েলের মন্ত্রী জানান, তারা মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে চান শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায়।
ট্রাম্পের জমানায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান ও মরক্কোর সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি হয়। আর ইহুদি দেশটিকে মুসলিম দেশের স্বীকৃতির এই ঘোষণা হোয়াইট হাউজ থেকে দেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, একদা শত্রু রাষ্ট্রে ইসরায়েলকে মেনে নিতে পারে সৌদি আরব। দুই পক্ষের গোপন বৈঠকের কথা ফাঁসও হয়েছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে, যদিও সৌদি আরব সে তথ্য পরে অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ডন জানিয়েছে, ইসরায়েলি মন্ত্রী জানিয়েছেন পঞ্চম দেশটি সৌদি আরব না হয়ে হতে পারে ওমান। সম্ভাবনা বেশি বলে জানান ইসরায়েলি মন্ত্রী।
ইসরায়েলের আগ্রহ আছে জনসংখ্যার দিক দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া এবং ধর্মের ভিত্তিতে জন্ম নেয়া পাকিস্তানের প্রতিও। ইসরায়েলের জন্মও হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে।
পাকিস্তানে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের একজন প্রতিনিধি সম্প্রতি গোপনে তেল আবিব সফর করেছেন বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের প্রভাবশালী দৈনিক জেরুজালেম পোস্ট। যদিও ইমরান সরকারের পক্ষ থেকে এটি স্বীকার করা হয়নি।
মঙ্গলবার আরব আমিরাত সফরে যাওয়া পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ কোরায়েশি বলেছেন, ইসরায়েল নিয়ে তারা কোনো চাপে নেই। আর ফিলিস্তিন প্রশ্নে স্থায়ী সমাধান না আসা পর্যন্ত ইসরায়েলকে মেনে নেবে না তার দেশ।
আমিরাত অবশ্য ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে।
পাকিস্তানের মতোই্ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানের শর্ত দিয়েছে ইন্দোনেশিয়াও।
অবশ্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোন মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকের আপাতত কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন নেতানিয়াহু সরকারের মন্ত্রী আকুঅনিস।
ফিলিস্তিনি সমস্যার সমাধান না হলেও সম্প্রতি প্রথমে মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাত, পরে বাহরাইন, এরপর আফ্রিকার সুদান এবং সব শেষে অঞ্চলটির মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মরক্কোও ইসরায়েলকে মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ইসরায়েলকে প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় মিশর ও প্রতিবেশী জর্ডান। মুসলিম বিশ্বে ইদানীং প্রভাবশালী হয়ে উঠা রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের দেশ তুরস্কেরও ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। মধ্যে টানাপড়েন হলেও দুই বছর পর সম্প্রতি তেল আবিবে রাষ্ট্রদূত পাঠিয়েছেন এরদোয়ান।