বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কৃষক আন্দোলন: ফের আলোচনায় বসার প্রস্তাব সরকারের

  •    
  • ২২ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৫:০৮

বৈঠকে বসার আগে আন্দোলরত কৃষক সংগঠনের নেতারা ফের আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তাতে সরকারের পক্ষে যেতে পারে, এমন কিছু নেই। বলা যেতে পারে সরকার ও কৃষকদের আলোচনায় বসার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

‘আত্মহত্যায় যে প্ররোচনা দেয় তাকে আটক করে পুলিশ। আমার ক্ষেত্রে অমিত শাহ এবং নরেন্দ্র মোদিকে আটক করা উচিত।’

উল্লিখিত মন্তব্য পাঞ্জাবের প্রবীণ কৃষক নিরঞ্জন সিংয়ের।

সোমবার বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন সিনঘু সীমান্তে আন্দোলনরত ওই কৃষক। কিন্তু সঙ্গীদের তৎপরতা ও চিকিৎসকদের সাহায্যে বিপদমুক্ত হন তিনি।

সুস্থ হয়েই আত্মহত্যার চেষ্টায় দায়ী করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।

এমন বাস্তবতায় কৃষকদের নতুন করে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত সরকার। আলোচনার দিন নির্ধারণ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে কৃষক সংগঠনগুলোকে। কিন্তু সরকারের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসবেন কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মঙ্গলবার বৈঠকে বসেছেন কৃষক নেতারা।

বৈঠকে বসার আগে আন্দোলরত কৃষক সংগঠনের নেতারা ফের আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তাতে সরকারের পক্ষে যেতে পারে, এমন কিছু নেই। বলা যেতে পারে সরকার ও কৃষকদের আলোচনায় বসার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন ক্রান্তিকারী কিষান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ড. দর্শন পাল।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার একেবারেই আন্তরিক নয়। আমরা সরকারকে এরই মধ্যে জানিয়েছি, কোনো ধরনের সংশোধনী আমরা মানব না। পুরোপুরি বাতিল করতে হবে তিনটি কৃষি আইন।’

জমহুরি কিষান সভার সাধারণ সম্পাদক কুলওয়ান্ত সিং সাঁধু বলেন, ‘আবার আলোচনায় বসার সরকারি প্রস্তাব শুধু সময় নষ্ট করার কৌশল। আগের বৈঠকে কী হয়েছে, তার বিবরণ জানানো হয়েছে পাঁচ পৃষ্ঠার চিঠিতে। সবটাই সময় নষ্টের কৌশল।’

রাষ্ট্রীয় কিষান মজদুর মহাসংঘের জাতীয় সভাপতি শিব কুমার কাক্কা বলেন, ‘চিঠিতেই স্পষ্ট, সরকার বৈঠক ডাকতে চায় না। এটা কেবল একটা আনুষ্ঠানিকতা। পরবর্তী পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে সরকার আন্তরিক নয়। নইলে বৈঠকের স্থান, সময় ঠিক করা থাকত।’

কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অনড় কৃষকরা। দিল্লি সীমান্তে তাদের বিক্ষোভ চলছে। বিতর্কিত আইনটি বাতিলের দাবিতে বনধ করেছেন তারা।

এ ছাড়া ৩৫টি কৃষক ইউনিয়নের নেতারা অনশনে বসেন। সরকারের সঙ্গে একাধিকবার তারা আলোচনায় বসলেও কোনো সমাধান হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমারসহ ক্ষমতাসীন দলের সব নেতাই বারবার বলছেন, কৃষিক্ষেত্রে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে। তাদের জীবন-জীবিকার মান উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বদ্ধপরিকর।

কিন্তু বাস্তবতা আসলে কী?

পাঞ্জাবের সরাইয়ে এক একর জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলেন অজিত সিং। খরচ হয়েছিল ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। ভেবেছিলেন অন্তত এক লাখ টাকা লাভ হবে। অথচ সেই কপি এখন কেজিপ্রতি ৭৫ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। এসব দেখে নিজেকে সামলাতে পারেননি তিনি। ক্ষেতের সব ফুলকপি নষ্ট করেছেন।

অজিত একা নন। পাঞ্জাবের আরও অনেক কৃষক এভাবেই নিজেদের ক্ষেতের কপি নষ্ট করছেন। কারণ মান্ডিতে দাম মিলছে না।

তারা চান, শুধু ধান, গম নয়, তার সঙ্গে অন্য সবজি, ফসলেরও ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি ) ধার্য করুক সরকার। এ লড়াইটাই দিল্লি সীমান্তে চালাচ্ছেন কৃষকরা।

শুধু পাঞ্জাব নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একই অবস্থা। বিহারের সমস্তিপুরের মুক্তপুর গ্রামের বাসিন্দা ওম প্রকাশ যাদব। নিজের ফুলকপির ক্ষেতে ট্রাক্টর চালিয়েছেন তিনি। সাড়ে তিন একর জমির সব কপি নষ্ট করেছেন। বাকি রয়েছে দেড় একর জমির কপি। সামনে তাও ধ্বংস করবেন তিনি।

আক্ষেপের সুরে যাদব বলেন, ‘দেশে কৃষকদের কী অবস্থা, বুঝে গেছি এতদিনে।’

কর্ণাটকে এক কৃষক ১৫ টন টমেটো শুকনা কুয়ায় ফেলে নষ্ট করেছেন। বেলগাভিতে নিজের ফুলকপির ক্ষেতে গরু ছেড়ে দিয়েছেন আরেক কৃষক। তাদের ভাষ্য, সরকার না দেখলে এভাবেই চলবে।

অবশ্য প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রীসহ সরকারি দলের নেতারা মনে করেন, কৃষকদের বিক্ষোভ ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’, ‘মাওবাদী’ বা ‘দেশবিরোধী’ শক্তির নিয়ন্ত্রণে।

এ বিভাগের আরো খবর