বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ভারতের কৃষক আন্দোলন চার সপ্তাহে এসে ঠেকেছে। এতদিনেও হয়নি কৃষকদের দাবি মেটাতে কার্যকর সমাধান।
এমনই এক সময়ে সরকারের ‘চোখ খুলতে’ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন পাঞ্জাবের তার্ন তারান শহরের ৭০ বছর বয়সী কৃষক নিরঞ্জন সিং।
সোমবার সকালে রাজধানী দিল্লির সিনঘু সীমান্তে অবস্থানরত কৃষকদের বিক্ষোভে যোগ দিতে আসার কিছুক্ষণ পরই কীটনাশক ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
পুলিশের বরাত দিয়ে দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, তার্ন তারান শহরের ভটল ভাই কে গ্রামের বাসিন্দা নিরঞ্জন সেলফোস ট্যাবলেট খেয়েছেন। প্রথমে তাকে সনিপাতের সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে হরিয়ানার রাজ্যের রোহতাক শহরের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসে তাকে ভর্তি করা হয়।
সনিপাতের এসপি জশনদীপ সিং রনধাওয়া বলেন, ‘নিরঞ্জনের অবস্থা এখন ভালোর দিকে।’
পুলিশের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, নিরঞ্জনের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। এ কৃষক জানিয়েছেন, বিক্ষোভস্থলে কৃষকদের দুর্দশা ও সরকারের উদাসীনতা তাকে বিচলিত করেছে।
এর পাঁচ দিন আগে ‘সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে’ বাবা রাম সিং (৬৫) নামের এক শিখ গুরু সিনঘু সীমান্তের কাছেই মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।
নিরঞ্জনের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিনি খুবই ধার্মিক। ২৫ একর জমির মালিক তারা।
নিরঞ্জনের নাতনি মনদীপ কৌর বলেন, ‘রোববার রাতে ফোন করে আমার সন্তানের খবর নেন দাদা। তাকে বিষণ্ণ মনে হয়নি। তার আত্মহত্যার খবর শুনে অবাক হয়েছি। আমরা কোনো ঋণে নেই। কোনো আর্থিক সমস্যার মধ্যেও ছিলেন না আমার দাদা।’
আত্মহত্যার চেষ্টার আগে লেখা চিরকুটে নিরঞ্জন বলেন, কৃষকদের কষ্ট সহ্য করতে পারেননি তিনি। আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত সরকারের ‘কান ও চোখ খুলবে’ বলে আশা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ঝড়, বৃষ্টি ও কুয়াশার মধ্যে আমার ভাই, বোন, প্রবীণ ও শিশুরা রেললাইন-রাস্তায় বসে আছে। মাথায় কোনো ছাদ নেই। আমরা কি আসলেই এ দেশের নাগরিক? সরকার কেন আমাদের সঙ্গে দাসের আচরণ করছে?
‘আমাদের নবম গুরু তেঘ বাহাদুর অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। আমি আমার জীবন বিসর্জন দিচ্ছি যাতে আমাদের কথা বধির আর বোবা এই সরকার শুনতে পায়।’