নানা ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কে ভাটা পড়েছে। এর জেরে মধ্য প্রাচ্যের দেশটি থেকে সহজ শর্তে নেয়া ৩০০ কোটি ডলার ঋণও ফেরত দিতে হচ্ছে ইমরান খানের সরকারকে।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক ডন তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ঋণের ১০০ কোটি ডলার এরই মধ্যে সৌদি আরবকে ফেরত দিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। আগামী মাসে আরও ১০০ কোটি ডলার ফেরত দিতে চাপ দিচ্ছে রিয়াদ। এ জন্য চীনের দ্বারস্ত ইসলামাবাদ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ঋণের অর্থ ফেরত নেয়ার ব্যাপারে সৌদি আরব থেকে পাকিস্তানকে যে চাপ দিচ্ছে তা খুবই অস্বাভাবিক।
ঐতিহাসিকভাবে মুসলিম দেশ দুটি ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কিন্তু চলতি বছরের শুরুর দিকে কাশ্মীর ইস্যুতে টানাপোড়েন শুরু হয় দেশ দুটির মধ্যে।
সৌদি আরবকে সরাসরি হুমকির সুরে কথা বলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে এক বৈঠকে কাশ্মীর ইস্যুতে সৌদি নেতৃত্বাধীন ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) গড়িমসি বন্ধ করতে বলেন তিনি।
মুসলিম বিশ্বের নানা সমস্যা নিয়ে ওআইসির নিরবতার কড়া সমালোচনা করেন কুরেশি। এই সংগঠনের বিকল্প গড়ে তোলারও আভাস দেয়া হয় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে।
উত্তেজনা নিরসনে আগস্টে রিয়াদ সফরে যান পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। কিন্তু বরফ গলেনি। মঙ্গলবারও ইসলামাবাদে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জেনারেল বাজওয়া।
সৌদি আরবকে ঋণের ১০০ কোটি ডলার পরিশোধ করার পর আগামী মাসে আরও ১০০ কোটি ডলার পরিশোধ করলে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট হুমকিতে পড়তে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
এ অবস্থায় দেশটিকে উদ্ধারে এগিয়ে এসেছে চীন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে চীন।’
বিষয়টি নিয়ে চীনের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সৌদি আরবে ১০০ কোটি ডলার পাঠিয়েছি। আগামী মাসে পাঠানো হবে আরও ১০০ ডলার।’
২০১৮ সালের শেষ দিকে পাকিস্তানকে সহজ শর্তে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ এবং ৩২০ কোটি ডলারের জ্বালানি তেল সুবিধা দিয়েছিল সৌদি আরব। কিন্তু কাশ্মীরসহ আরও কিছু বিষয়ে দেশ দুটির মধ্যে দূরত্ব ক্রমেই বাড়তে তাকে। এর অংশ হিসেবেই ঋণের টাকা ফেরত নিচ্ছে রিয়াদ।