বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাতীয় সমস্যা হয়ে উঠবে কৃষক বিক্ষোভ: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

  •    
  • ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ২৩:০২

আন্দোলনের ২১তম দিনে আরও একবার সরকারের প্রস্তাব খারিজ করে দিল ৩২টি কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ।

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে আন্দোলনের ২১তম দিনে আরও একবার সরকারের প্রস্তাব খারিজ করে দিল ৩২টি কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ।

৯ ডিসেম্বর নতুন কৃষি আইন-এ কিছু সংশোধনের লিখিত প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই প্রস্তাব খারিজ করে বুধবার লিখিত জবাব দিয়েছে আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলো।

তাদের দাবি, নতুন আইন সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি তাদের হুঁশিয়ারি, অন্য কৃষক সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা বন্ধ করতে হবে।

এদিকে, বুধবারই সুপ্রিম কোর্ট কৃষক আন্দোলন নিয়ে একটি মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে কৃষক প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলেছে।

কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব বিবেক আগরওয়ালকে ইমেল করে কৃষকদের সংগঠন। এতে সংযুক্ত কৃষক মোর্চার নেতা ডা. দর্শনপাল লিখেছেন, ‘‌আপনাদের থেকে যেদিন চিঠি ও প্রস্তাব পেয়েছি, সেদিনই কৃষকদের সঙ্গে আমরা বৈঠকে বসেছি। সেখানে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার সেই নিয়েই সরকারকে জানাতে চাই, যে আমরা ওই প্রস্তাব খারিজ করছি। কারণ ৫ ডিসেম্বর সরকারি প্রতিনিধিরা মুখে যে প্রস্তাব দিয়েছিল, এটা তারই লিখিত রূপ।’‌

পাশাপাশি কৃষক সংগঠন সুর চড়িয়ে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সরকারকে। জানিয়েছে, এই আন্দোলনকে হেয় করার চেষ্টা বন্ধ হোক। আর সমান্তরালভাবে অন্য কৃষক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনাও বন্ধ হোক।

এই ইমেল পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে কৃষকদের আবার আলোচনায় ডাকা হবে কি না, সেই নিয়ে মুখ খোলেনি।

মঙ্গলবারই একটি সাক্ষাৎকারে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর জানিয়েছেন, সরকারের প্রস্তাবের লিখিত জবাব দিলে এবং তা মেনে নিলেই কৃষকদের আলোচনায় ডাকা হবে।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টে পরস্পর বিরোধী একাধিক আবেদনের শুনানি হয়েছে বুধবার। প্রথমটি, ২০ দিন ধরে দিল্লির সীমানায় রাস্তা আটকে কৃষকদের বিক্ষোভের জেরে তৈরি হওয়া সমস্যার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা।

আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ, যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি দিল্লিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। পাশাপাশি, কৃষকদের জমায়েত থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোরও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলাটি কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের একটি গোষ্ঠীর করা। সেখানে নয়া আইনে কৃষকদের স্বার্থহানির পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ তোলা হয়েছে।

তৃতীয় একটি আবেদনে কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশ এবং যন্তরমন্তরে বিক্ষোভের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘অবিলম্বে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে কৃষক আন্দোলন শিগগিরই জাতীয় সমস্যা হয়ে উঠবে।’

নরেন্দ্র মোদি সরকারের তরফে কৃষকদের আশ্বাস দেয়া হয়েছে, নয়া বিলে তাদের কোনো ক্ষতি হবে না। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ বিষয়ে কেন্দ্রের যুক্তি কার্যত খারিজ করে দিয়েছে।

বেঞ্চের মন্তব্য, ‘যখন তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তখন এমন আশ্বাসের মানে কী?’ আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্রের আলোচনার পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত। একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিবাদী কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও এখনও কোনো সমাধানসূত্রের সন্ধান মেলেনি।

এ নিয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘এ ভাবে চললে আপনাদের আলোচনা ফের ব্যর্থ হবে। ওরা (কৃষকরা) রাজি হবেন না। এমন একটি নাম বলুন, যিনি সামনে আসতে পারেন।’

সমস্যা সমাধানে, বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনেরও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

সামগ্রিকভাবে আবেদনগুলোর ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘বেশির ভাগ আবেদনই কল্পিত ও ভিত্তিহীন। আবেদনকারী পক্ষের সঙ্গে আন্দোলনের প্রত্যক্ষ কোনো যোগাযোগ নেই। আন্দোলনের অধিকার দাবি করা ছাড়া ওই আবেদনগুলোর আইনগত কোনো ভিত্তিও নেই।’

প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি এ এস বোপান্না ও বিচারপতি ভি রামসুব্রামনিয়ান। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।

এ বিভাগের আরো খবর