কৃষকদের ভুল বুঝিয়ে লাভ নেই, তাদের ঠিক পথে নিয়ে আসব- মঙ্গলবার গুজরাটের কচ্ছ জেলায় এক অনুষ্ঠানে বিরোধীদের এভাবেই আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এদিন ছিল তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষক বিক্ষোভের ২০তম দিন।
এমন পরিস্থিতিতে এ দিন গুজরাটে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
কচ্ছ জেলায় কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময় কৃষকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন মোদি।
তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘কৃষকদের বলা হয়েছে নতুন কৃষি আইন বাস্তবায়িত হলে জমি অন্যরা দখল করবে। আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনি দুধ বিক্রি করছেন বলে কি ডেইরি মালিকরা আপনার গরু নিয়ে নেবে?
মোদি বলেন, ‘সরকার সর্বদা কৃষক কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমরা কৃষকদের আশ্বাস এবং তাদের উদ্বেগের সমাধান করব।’
গুজরাটে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে এটি পরিষ্কার যে সরকার কৃষক সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রাখার কথা বললেও, তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি মানবে না কিছুতেই।
শীর্ষস্থানীয় সূত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, কৃষক আন্দোলন ভাঙতে ত্রিমুখী কৌশল নিয়েছে সরকার।
এক, বিজেপি প্রভাবিত রাজ্যগুলির কিছু কৃষক সংগঠনকে চলতি আন্দোলনের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো। ইতিমধ্যেই হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশের কিছু কৃষক সংগঠন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের সঙ্গে দেখা করে তিনটি কৃষি আইনকে সমর্থন জানিয়েছেন।
দুই, প্রতিদিন নিয়ম করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিজেপি নেতাদের দিয়ে কৃষক আন্দোলনকে জনসমক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করা। কৃষক আন্দোলন মাওবাদী, বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত বলে ইতোমধ্যেই তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, পীযুষ গোয়েলরা।
তিন, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে নিজেদের রাজ্যে কৃষক আন্দোলন যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে।
গুজরাটে বিরোধীদের তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিরোধীরা ক্ষমতায় থাকার সময় তারা এই কৃষিক্ষেত্র সংস্কারের পক্ষে ছিলেন। বিরোধীরা কৃষকদের বিভ্রান্ত করছে, তাদের কাঁধে হাত রেখে গুলি চালাচ্ছে।’
মোদি বলেন, ‘তারা এই সংস্কারগুলি চেয়েছিল কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকার সময় পারেনি। এখন আমরা এটি করতে পেরেছি, তারা কৃষকদের বিভ্রান্ত করছে।’
সোমবার ৩২টি কৃষক ইউনিয়নের প্রধানরা অনশনে বসেছিলেন। এর আগে, কয়েকবার সরকারের সঙ্গে কৃষকরা আলোচনার টেবিলে বসলেও জট কাটেনি। কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে গত সপ্তাহে ভারত বনধও পালন করেন কৃষকরা।
মোদির অভিযোগ, ‘কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের অনবরত ভুল বুঝিয়ে যাচ্ছে বিরোধীরা। তাদের উসকে দেয়া হচ্ছে।’