পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল ও ভুটান। যৌথ এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে দেশ দুটি।
চুক্তি অনুযায়ী উভয় দেশ ‘পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পর্ক আরও জোরদার করবে’ বলে শনিবার যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি করে ইসরায়েল। তবে এসবের সঙ্গে হিমালয়বেষ্টিত ভুটানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের কোনো মিল নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশে উভয় দেশের মধ্যে কয়েক বছর ধরে যোগাযোগ চলছিল। এর জের ধরেই হলো এই চুক্তি।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবি আশকেনাজি বলেন, ‘ইসরায়েলের স্বীকৃতি পাওয়ার গন্ডি আরও প্রসারিত হচ্ছে। ভুটান কিংডমের সঙ্গে এই সম্পর্ক স্থাপন এশিয়ায় ইসরায়েলের বন্ধন দৃঢ় করায় একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।’
ভুটানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের চুক্তিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। টুইটারে তিনি লিখেছেন- ‘শান্তিচুক্তিগুলোর মধ্যে এটা বাড়তি একটা ফল’।
নেতানিয়াহু জানান, আরও অনেক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার খুব কাছে আছে ইসরায়েল।
যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, শনিবার ভারতে ইসরায়েল ও ভুটানের রাষ্ট্রদূত দেশ দুটির সম্পর্ক স্থাপন বিষয়ে চুক্তি করে। চুক্তির আওতায় পানি ব্যবস্থাপনা, কৃষি, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য যৌথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে দেশ দুটি।
এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রন মালকা। টুইটারে লিখেছেন- ‘এই চুক্তির ফলে উভয় দেশের জনগণ লাভবান হয় এমন অনেক সুযোগ তৈরি হবে।’
এর আগে শনিবার উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশ মরক্কোর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকের ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। চলতি বছরের আগস্টের পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চারটি আরব দেশের সঙ্গে এমন চুক্তি হলো ইহুদি রাষ্ট্রটির।
এর আগে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকের ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদান।
এসব চুক্তির কঠোর সমালোচনা করে আসছে ফিলিস্তিন। ভালোভাবে দেখছে না ইরান ও তুরস্কের মতো দেশগুলোও। তাদের মতে, অধিকৃত ভূমি ফিলিস্তিনকে ফিরিয়ে দেয়ার আগে এবং সেখানে শান্তি ফেরা পর্যন্ত ইরসায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া উচিত হবে না।
ইসরায়েলের সঙ্গে মরক্কোর চুক্তির ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ফিলিস্তিনও। এ বিষয়ে ২০০২ সালে স্বাক্ষরিত ‘আরব শান্তি উদ্যোগ’এর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে তারা।
ওই চুক্তি অনুযায়ী, ইরসায়েলকে ১৯৬৭ সালের সীমারেখা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তখন পশ্চিম তীর ও গাজা নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সাপেক্ষে আরব দেশগুলো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে।