সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদানের পথে হাঁটল মরক্কোও। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এবার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দিয়েছে উত্তর আফ্রিকার মুসলিম প্রধান দেশটি।
গত চার মাসের মধ্যে এই নিয়ে চারটি মুসলিম দেশ ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক পাতার ঘোষণা দিল।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, চুক্তির অংশ হিসেবে পশ্চিম সাহারায় মরক্কোর সার্বভৌমত্বে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্রে। কয়েক দশক ধরে সেখানে আঞ্চলিক বিরোধ চলে আসছে। মরক্কোর বাহিনী আলজেরিয়া সমর্থিত স্বাধীনতাকামী পলিসারো ফ্রন্টের সঙ্গে যুদ্ধে বিবাদমান।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ কিং মোহাম্মেদের সঙ্গে ফোনে আলাপ হয় ট্রাম্পের। ইসরায়েলের সঙ্গে মরক্কোর সম্পর্ক স্বাভাবিকের ঐকমত্য নিয়ে টুইটও করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট লিখেছেন- ‘আরও একটি ঐতিহাসিক ব্রেকথ্রু! আমাদের অসাধারণ দুই বন্ধু ইসরায়েল ও কিংডম অফ মরক্কো পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে একমত হয়েছে- মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য এটা যুগান্তকারী এক মুহূর্ত।’
আগস্টের পর এই নিয়ে চারটি দেশ ইরসায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পাতার ঘোষণা দিল। এর আগে ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদান। এসব চুক্তির কঠোর সমালোচনা করে আসছে ফিলিস্তিন, ইরান ও তুরস্কের মতো দেশগুলো।
তাদের দাবি, অধিকৃত ভূমি ফিলিস্তিনকে ফিরিয়ে দেয়ার আগে এবং সেখানে শান্তি ফেরা পর্যন্ত ইরসায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া উচিত হবে না।
ইসরায়েলের সঙ্গে মরক্কোর চুক্তির ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে ২০০২ সালে স্বাক্ষরিত ‘আরব শান্তি উদ্যোগ’ এর কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য বাসাম আস-সাহি।
ওই চুক্তি অনুযায়ী, ইরসায়েলকে ১৯৬৭ সালের সীমারেখা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তখন পশ্চিম তীর ও গাজা নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সাপেক্ষে আরব দেশগুলো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে।
এই শর্তের বাইরে গিয়ে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিকের চুক্তি অগ্রহণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাসাম আস-সাহি। তিনি বলেন, ‘এটা অগ্রহণযোগ্য। এতে ইসরায়েলের বিদ্বেষ এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার প্রত্যাখানের মনোভাব আরও তীব্র হবে।’
এই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেছেন গাজার হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম। তিনি বলেন, ‘এটা পাপ। এটা ফিলিস্তিনি জনগণের মঙ্গলজনক হবে না। সম্পর্ক স্বাভাবিকের প্রতিটা চুক্তি ইসরায়েল দখলদারেরা ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর আক্রমণের মাত্রা বাড়ানোয় ব্যবহার করছে এবং তারা তাদের অবস্থান দৃঢ় করছে।’
এ বিষয়ে মরক্কোর রাজা কিং মোহাম্মেদ বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকেও ফোন করেছেন বলে রাজ প্রসাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে। তাতে জানানো হয়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব নিরসনে দুই দেশ সমাধানের নীতিতেই অটল রয়েছে রাবাত।