কৃষক নেতাদের ডাকা ভারত বনধে পশ্চিমবঙ্গের জনজীবন বিপর্যস্ত। ক্ষমতাসীন তৃণমূলের পাশাপাশি বাম ও কংগ্রেস বনধকে সমর্থন করায় অচল পশ্চিমবঙ্গ। ভারত বনধের পাশাপাশি রাজ্যের উত্তরে বিজেপির ডাকে চলছে উত্তরবঙ্গ বনধ।
ভারত সরকারকে কৃষি বিল প্রত্যাহার করতে হবে- এই দাবিতে বেশ কয়েক দিন ধরেই পাঞ্জাব ও হরিয়ানা প্রদেশের কৃষকরা আন্দোলন করছেন। ভারত সরকারের সঙ্গে বৈঠকেও কোনো সমাধান সূত্র মেলেনি।
এর প্রতিবাদে ভারত বনধের ডাক দিয়েছেন কৃষকরা। তাদের সেই বনধকে সমর্থন জানিয়েছে সিপিএমসহ বামপন্থি দলগুলি। কংগ্রেসও সমর্থন করেছে বনধকে।
সোমবারই মেদিনীপুরের দলীয় জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও জানিয়ে দেন তৃণমূল এই বনধকে সমর্থন করবে। তারপরই শুরু হয় বনধকে সফল করার তৃণমূলি উদ্যোগ।
কৃষি বিলের বিরোধী দলগুলির এই বনধের পাশাপাশি বিজেপিও ডাক দিয়েছে উত্তরবঙ্গ বনধের। সোমবার তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উলেন রায় নামে এক কর্মী মারা যান। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশের অত্যাচারেই প্রাণ হারিয়েছেন উলেন।
এরই প্রতিবাদে ডাকা হয়েছে উত্তরবঙ্গ বনধ। উত্তরবঙ্গের জনজীবনও বনধের কারণে বিপর্যস্ত। বিজেপির পাশাপাশি কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে শিলিগুড়িতে সিপিএমও মিছিল করে।
মাস পাঁচেক পরেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার ভোট। এখন থেকেই বাড়ছে খুন, সন্ত্রাস। সোমবার রাতে নদিয়ার গয়েশপুরে বাপ্পা সরকার (৪৫) নামে এক তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাপ্পার ছেলে বিশাল জানিয়েছেন, তার বাবা তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বাড়ির কাছেই তাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুকান্ত চ্যাটার্জির অভিযোগ, বিজেপির গুন্ডা বাহিনীই তাদের দলের বাপ্পাকে খুন করেছে। বিজেপির স্থানীয় নেতা অভিজিত মজুমদার খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উত্তেজনার মধ্যেই চলছে বনধ। এখনও পর্যন্ত বনধকে ঘিরে বড় ধরনের অশান্তির কোনও খবর নেই। স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত।
বিজেপির দাবি, উত্তরবঙ্গের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পুলিশি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বনধে অংশ নিচ্ছেন। এর জন্য উত্তরবঙ্গবাসীকে ধন্যবাদও জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস জোটের পক্ষেও দাবি করা হয়েছে কৃষি বিলের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ তাদের মত প্রকাশ করেছেন। তাই বনধ সফল।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, কৃষকদের ন্যায্য আন্দোলনের পাশে তার দল থাকবে। প্রয়োজনে সর্বতভাবে কৃষকদের সাহায্য করতেও তিনি প্রস্তুত।