পশ্চিমবঙ্গে ক্ষোভের কারণে আগেই মন্ত্রীত্ব ছেড়েছেন শুভেন্দু অধিকারি। এবার মমতা ব্যানার্জির মন্ত্রিসভার আরেক সদস্য রাজীব ব্যানার্জিও প্রকাশ্যে নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন। ফলে সমস্যায় তৃণমূল কংগ্রেস।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে তৃণমূলের সংসারে অশান্তি। ইতিমধ্যে পরিবহনমন্ত্রীর পদ ছেড়ে বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারি।
শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বনমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জি শনিবার ফের দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। রাজীবের অভিযোগ, দুর্নীতিগ্রস্তরাই এখন দলের সম্পদ। এর আগেও তিনি দুর্নীতি নিয়ে মুখ খোলেন।
ইতিমধ্যেই এক ঝাঁক বিধায়ক দলবিরোধী সুর গাইতে শুরু করেছেন। বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন বহু তৃণমূল নেতা। বেশির ভাগেরই ক্ষোভ মমতা ব্যানার্জির ভাইয়ের ছেলে সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির ওপর।
সেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আজ সকালে মেদিনীপুরে প্রশ্ন তোলেন, 'ভাইপোর পিছনে কনভয় (গাড়ি বহর) কেন? সে কি লাটের বাট? কোলে চড়ে নেতা হয়েছে।'
বসে নেই তৃণমূলও। এদিনই দলের বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাস খুনে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিয়েছে পুলিশ। মুকুলকেই মূল ষড়যন্ত্রী হিসাবে দেখানো হয়েছে।
জবাব দিয়েছেন মুকুলও। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশেই চার্জশিটে তাঁর নাম দেয়া হয়েছে। তিনি গোটা ঘটনাটিকে হাস্যকর বলেও কটাক্ষ করেন।
এদিকে, সামাজিক মাধ্যমে এদিন রটে যায় মালদার তৃণমূল নেত্রী মৌসুম বেনজির নূর দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু সেই রটনা উড়িয়ে দেন মৌসুম নিজেই।
তিনি বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবেই এইসব রটানো হচ্ছে। আমার জ্বর হয়েছিল। তাই বাড়িতেই ছিলাম। মিটিংয়ে যেতে পারিনি।'
দলবদল, বিবৃতির লড়াইয়ের পাশাপাশি বাড়ছে সংঘর্ষও। দলীয় কোন্দলও শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিনই কলকাতার মুচিপাড়া এলাকায় 'দুয়ারে সরকার' কর্মসূচি পালনের সময় খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে।
রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী সাধন পান্ডের উপস্থিতিতেই চলে তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর লড়াই। সাধনকেও বেশ উত্তেজিত অবস্থায় দেখা যায়।এ ছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয়েছে এলাকা দখলের লড়াই। বিজেপির অভিযোগ, সন্ত্রাস কায়েম করেছে তৃণমূল সমর্থকরা। পুলিশ নিষ্ক্রিয়।
এরই মধ্যে আজ বিজেপির তরফে দাবি তোলা হয়, আসন্ন বিধানসভা ভোটে রাজ্য সরকারের কর্মীদের ব্যবহার করা চলবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের দিয়েই ভোট করানোর দাবি তোলেন তাঁরা।