করোনাভাইরাসের টিকা বাজারে সহজলভ্য হলে তা গ্রহণে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকের জোর করা হবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে যাওয়া জো বাইডেন।
সেন্টারর্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) নাগরিকদের ঘরে থাকা ব্যতীত ‘সর্বত্র মাস্ক পরতে’ প্রথমবারের মতো আহ্বান জানানোর পর এ কথা জানালেন ডেমোক্র্যাট এই নেতা।
সিডিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র করোনা সংক্রমণের ‘সর্বোচ্চ স্তরে’ প্রবেশ করেছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে আড়াই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে আরও প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার মানুষের শরীরে।
এ নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটিতে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ কোটি ৪৩ লাখ। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষের।
আশার খবর হলো, করোনা রোধে কার্যকর দুটি টিকার উদ্ভাবনের খবর দিয়েছে দুই মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও মডার্না।
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত ধাপে দেখা গেছে, জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়ো-এনটেকের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্ভাবিত ফাইজারের টিকাটি করোনা থেকে মানুষকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত নিরাপদ রাখতে পারে। আর মর্ডার্নার টিকাটির কার্যকারিতার মাত্রা ৯৪ শতাংশ।
টিকা ব্যবহারিক পর্যায়ে আনার জন্য দুটি প্রতিষ্ঠানই যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে আবেদন করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স আটলান্টায় সিডিসির কার্যালয়ে পরিদর্শনে গিয়ে শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, করোনা টিকার অনুমোদন পেতে আরও ‘দেড় সপ্তাহ লাগতে পারে’।
তবে টিকা নিয়ে বিলম্ব করছে না যুক্তরাজ্য। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বুধবার ফাইজারের টিকা প্রয়োগের অনুমিত দিয়ে দিয়েছে দেশটি।
এদিকে পিউ রিসার্স সেন্টার এক জরিপে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মানুষ করোনার টিকা নিতে রাজি নয়। এই মুহূর্তে দেশটির মাত্র ৬০ শতাংশ মানুষ করোনার টিকা গ্রহণে প্রস্তুত বা রাজি। এর আগে সেপ্টেম্বরে জরিপে দেখা গিয়েছিল টিকা নিতে রাজি ৫১ শতাংশ মানুষ।
টিকা গ্রহণে নাগরিকদের জোরাজুরি করতে নারাজ বাইডেন। ডেলওয়ারের উইলমিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘তাদের জন্য এটা বাধ্যতামূলক করা হবে বলে আমি মনে করি না। আমি বিষয়টা বাধ্যতামূলক করার দাবিও করব না।’
‘তবে মানুষজনকে সঠিক কাজটি করার জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় এসে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। যখন জনগণের এমন অভিব্যক্তি দেখা যায়, তখন প্রমাণ দেখানোটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।’
বৃহস্পতিআর সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা নিয়ে সন্দেহ দূর করতে প্রকাশ্যেই ভ্যাকসিন নেবেন তিনি। এ ছাড়া সাবেক তিন প্রেসিডেন্ট- বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটিনও প্রকাশ্যে করোনার টিকা নিতে প্রস্তুত।
এর মধ্য দিয়ে টিকা নিয়ে নাগরিকদের ভুল ভাঙবে বলে বিশ্বাস বাইডেনের। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, তারা তখন টিকার ব্যাপারে অগ্রসর এবং অন্য মানুষকে রক্ষা করার বিষয়টি দেশের প্রতি দায়িত্বের অংশ হিসেবেই দেখবে।’