বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জমি ছেড়ে রাস্তায় কেন কৃষক

  •    
  • ৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৩:৫২

‘কৃষকদের মুক্ত বাজার বা বড় করপোরেটদের ওপর ভরসা কীভাবে থাকবে, যেখানে এরই মধ্যে তাদের বেশির ভাগ পণ্য রাষ্ট্র নয়, ব্যক্তি কেনে?’ প্রশ্ন শর্মার।

বড় মাছ যেভাবে ছোট মাছ খায়, ঠিক সেভাবে এখন বড় করপোরেট কোম্পানি কৃষকদের খাবে।

বিবিসির সাংবাদিক সৌতিক বিশ্বাসের বিশ্লেষণে এমনটাই বলেছেন রাকেশ বিয়াস নামে ভারতে আন্দোলনরত এক কৃষক।

নরেন্দ্র মোদি সরকারের কৃষি সংক্রান্ত তিনটি বাজারবান্ধব আইন বাতিলের দাবিতে রাকেশের মতো হাজার হাজার কৃষক কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।

দশকের পর দশক ধরে চলা কৃষি পণ্যের মূল্য, বিক্রি ও সংরক্ষণ নীতি লাগামহীন মুক্ত বাজারের কবল থেকে ভারতের কৃষকদের কিছুটা হলেও রক্ষা করে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি পাস হওয়া কৃষি আইনের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা।

বিতর্কিত আইনের বিরুদ্ধে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ভারতের কৃষকরা পরিবার-স্বজন নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস উপেক্ষা করে অবরুদ্ধ করেছেন রাজধানী দিল্লির সীমান্ত। তীব্র শীতে খোলা আকাশের নিচে তারা রান্না করছেন, ঘুমাচ্ছেন।

এ বিষয়ে ভারতের খাদ্য ও বাণিজ্য নীতিবিষয়ক বিশ্লেষক দেবিন্দর শর্মা বলেন, ‘অভিনব এই প্রতিবাদ। রাজনীতি বা ধর্ম একে নিয়ন্ত্রণ করছে না। বরং রাজনীতিকরাই কৃষকদের চলমান বিক্ষোভের সমালোচনা করছেন।’

বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতের কৃষকরা কঠিন সময় পার করছেন। বিভিন্ন কারণে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ তারা। দেশটির জনগোষ্ঠীর অর্ধেকেরও বেশি কৃষিখামারে কাজ করেন। কিন্তু ভারতের জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান মাত্র ছয় ভাগের এক ভাগ। নিম্নমুখী উৎপাদন ক্ষমতা ও আধুনিকীকরণের উদ্যোগের অভাব দীর্ঘদিন ধরে এ খাতের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করেছে। অনিশ্চিত কৃষিপণ্যের মূল্য ও মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফার দৌরাত্ম্যে ধুঁকছেন কৃষকরা।

শর্মা বলেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দীর্ঘ সময় ধরে কৃষকদের মধ্যে দানা বাঁধছিল। নতুন কৃষি আইন সেই পুঞ্জীভূত ক্ষোভকে উস্কে দিয়েছে।’

ভারতের বেশির ভাগ কৃষক প্রান্তিক। এদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ এক একরেরও কম জমির মালিক। মাত্র ছয় শতাংশ কৃষক তাদের পণ্যের ন্যায্য দাম পান। ৯০ শতাংশেরও বেশি কৃষক তাদের পণ্য খোলা বাজারে বিক্রি করতে বাধ্য হন।

ভারতের এক অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, দেশের অর্ধেকেরও বেশি কৃষকের ‘বিক্রি করার মতো পর্যাপ্ত পণ্য নেই’।

২০১৬ সালের অর্থনৈতিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের অর্ধেকেরও বেশি রাজ্যে থাকা প্রতি কৃষক পরিবারের গড় বার্ষিক আয় ২২ হাজার ৯৬০ টাকা।

‘কৃষকদের মুক্ত বাজার বা বড় করপোরেটদের ওপর ভরসা কীভাবে থাকবে, যেখানে এরই মধ্যে তাদের বেশির ভাগ পণ্য রাষ্ট্র নয়, ব্যক্তি কেনে?’ প্রশ্ন শর্মার। বিক্ষোভে অংশ নেয়া গুরনাম সিং চারুনি নামে এক কৃষক নেতা বলেন, ‘এই আইনে আমরা আমাদের জমি হারাব। বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে কেনার ক্ষমতা দিলে আমাদের আয় কমে যাবে। এসব করপোরেটদের ওপর আমাদের আস্থা নেই। কম দুর্নীতি ও বেশি নিয়ন্ত্রণের দেশে মুক্ত বাজার অর্থনীতি কাজ করে। কিন্তু এখানে কৃষিখাতে মুক্ত বাজার চালু করলে আমরা পথে বসব।’

 

এ বিভাগের আরো খবর