বহু জল্পনার পর রাজ্যের সদ্য পদত্যাগী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলেই থাকছেন। আর এটা বিজেপির জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কেননা তারা ভেবেছিল শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে শুভেন্দু অধিকারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নাম। তাঁর বাবা ও ভাই তৃণমূলের সাংসদ। তিনি নিজেও পরিবহনসহ একাধিক দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে সম্প্রতি মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করেন তিনি।
মন্ত্রীত্ব ত্যাগের পর বিভিন্ন মহলে জল্পনা শুরু হয় শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। তিনি নিজেও সেই জল্পনায় ইন্ধন দিতে থাকেন। বিজেপি শিবির থেকেও শুভেন্দুকে দলে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।
বেশ কয়েক দিন ধরেই শুভেন্দুকে নিয়ে টানাপোড়েন চললেও তিনি নিজে মুখ খোলেননি। এড়িয়ে চলতে থাকেন দলীয় নেতৃত্বকে। অরাজনৈতিক মঞ্চ ব্যবহার করে জনসংযোগে মন দেন।
অবশেষে মঙ্গলবার রাতে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হলো শুভেন্দুর। দলের প্রবীন সাংসদ সৌগত রায়ের উদ্যোগে মমতা ব্যানার্জির ভাইপো ও সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি এবং নির্বাচন কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক করেন শুভেন্দু।
বৈঠক থেকেই শুভেন্দু মুঠোফোনে কথা বলেন দলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। উত্তর কলকাতার একটি বাড়িতে দু-ঘণ্টা ধরে চলে এই বৈঠক।
বৈঠক শেষে সৌগত রায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বৈঠক খুব ভালো হয়েছে। কোনও সমস্যা নেই। আগেও বলেছি, শুভেন্দু তৃণমূলে আছেন। থাকবেনও।’
শুভেন্দু দলবদল করবেন না, এটা বুঝতে পেরেই হতাশা দেখা দেয় বিজেপি শিবিরে। কিন্তু মুখে তাঁরা কিছু বলছেন না।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বুধবার বলেন, ‘শুভেন্দুবাবুর বিষয়টি তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। উনি তো দল ছাড়েননি এখনও। দল ছাড়লে বিজেপিতে উনি স্বাগত।’
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় বলেন, ‘অনেকেই আর তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়াতে চাইছেন না। শুভেন্দু এলে ভালো, না এলেও বিজেপিই জিতবে।’
এদিকে উচ্ছসিত তৃণমূল শিবির। একদিন আগেও শুভেন্দুকে কটাক্ষ করলেও সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘খুব ভালো খবর। শুভেন্দু থাকছেন। আমি নিজেও ওঁর সঙ্গে কথা বলব। মমতা বন্দ্যোপাধায়ের নেতৃত্বে সবাই মিলে বিজেপিকে হারাব।’