পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় প্রচার অভিযানে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার।
জনসংযোগে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলবে আগামী দুই মাস।
রাজ্য সরকারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, “‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের প্রায় এক ডজন কর্মসূচির প্রচার ও পিছিয়ে পড়াদের দুঃখ-দুর্দশার বিষয়টি সামনে আনা হবে।’
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রকল্পের অংশ হিসেবে ১ ডিসেম্বর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে রাজ্যের ৩৪৪টি ব্লকের প্রতিটি গ্রামে ন্যূনতম চারটি ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। এ ক্যাম্পগুলোতে এমজিএনআরইজিএ চাকরি কার্ড, স্বাস্থ্য কার্ড, বর্ণ সনদ ও রেশন কার্ডসহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধা পেতে নাগরিকদের সাহায্য করবেন সরকারি কর্মকর্তারা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন এরই মধ্যে বিনা খরচে তথ্য দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্র’ নামের প্রকল্পটিতে জোর দিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে।
রাজ্য সরকারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানান, সরকার ছয় হাজার ৮০০-এর বেশি লোক তিন হাজার ৪০০টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে নিয়োগ করেছে। এই কর্মীরা নাগরিকদের সরকারি নানা প্রকল্প ও সুবিধা সম্পর্কে জানাবেন এবং সেগুলোয় প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে সহায়তা করবেন।
নাগরিকরা এই কেন্দ্রগুলো থেকে বিনা খরচে প্রায় ৩৮টি বিভাগের ২৪০ ধরনের মতো সরকারি পরিষেবার তথ্য জানতে পারবেন।
কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তৃণমূল কংগ্রেসের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের সমালোচনা করেছে। এটি সরকারি কার্যক্রম নাকি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের প্রচার, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, ‘মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা চলছে। বুড়োদের দল তৃণমূলে কিছুতেই লাভ নেই।’
অন্যদিকে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, ‘দিলীপ বাবুরা মানুষের ভালো দেখতে পারেন না। বাংলার সরকার রাজ্যবাসীর মঙ্গলের জন্য সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা মানুষের দুয়ারে হাজির করেছে। এটা পছন্দ নয় বিজেপির।’
বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় তার সরকারকে হারাতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কাউকে ভয় পাই না। শেষ কথা বলবেন জনগণ।’
পশ্চিমবঙ্গে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে ৪২টি আসনের ১৮টি পেয়েছিল বিজেপি।