বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে ‘দিল্লি চলো’ মিছিল করছে ভারতের কৃষকেরা। এদের মধ্যে হরিয়ানার কৃষকরাও রয়েছেন। তবে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা মনোহর লাল খাট্টার দাবি করেছেন, আন্দোলনরত কৃষকদের মধ্যে হরিয়ানার কেউ নেই। তার এই দাবির প্রতিবাদে গণমাধ্যমের সামনে নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়েছেন ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া রাজ্যটির কৃষকেরা।
শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন এ খবর জানানো হয়েছে।
মিছিলে অংশ নেয়া এক কৃষক ব্রান্দি সিং অধর এনডিটিভিকে নিজের পরিচয়পত্র দেখিয়ে জানান, শুধু হরিয়ানা নয়। তাদের সঙ্গে পাঞ্জাবসহ আরও কয়েকটি রাজ্যের কৃষকেরা রয়েছেন। কৃষক-বিরোধী আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে যাবেন না।
মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘জনাব খাট্টার, হরিয়ানার পরিচয়পত্রসহ আমি এখানে বসে আছি। আপনি যদি আরও প্রমাণ চান, তাও দিতে প্রস্তুত আছি। আমরা যদি হরিয়ানার না হই, তবে কোথাকার? পাকিস্তানের?’
ব্রান্দ্রি সিংয়ের পাশে থাকা কৃষকরাও জানান, তারা অনেকেই হরিয়ানা থেকে এসেছেন।
তাদের মতে, রাজ্যটির তিনটি জেলার প্রায় পনেরশ কৃষক মিছিলে অংশ নিয়েছেন। আরও কয়েকশ কৃষক মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল গণমাধ্যমের সামনে দাবি করেছিলেন, রাজ্যটির কৃষকেরা আন্দোলনে অংশ নেয়নি।
মিছিলে কৃষকদের ওপর লাঠি চার্জ করেছে রাজ্যটির পুলিশ। এজন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মনোহর।
এ সময় তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংকে ‘দিল্লি চলো’ মিছিলের জন্য দায়ী করেন।
বুধবার থেকে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কৃষকরা দিল্লি অভিমুখে মিছিল করছেন।
কৃষকরা যাতে দিল্লি পৌঁছাতে না পারেন সেজন্য হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশে তাদের ওপর লাঠি চার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে, সামরিক কায়দায় পরিখা খুড়ে ও জল কামান দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেছে পুলিশ। শুক্রবার আন্দোলনকারীদের দিল্লিতে ঢুকতে দিতে বাধ্য হয়েছে তারা।
ভারতের নতুন কৃষি আইনে বলা হয়েছে, কৃষকরা চাইলেই যে কারো কাছে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারবেন। যা আগে শুধু সরকার অনুমোদিত এজেন্টদের কাছে বিক্রি করা যেত।
তবে কৃষকেরা বলছেন, এর ফলে সরকার-নির্ধারিত মূল্যে পাইকারি বাজারে ফসল বিক্রির যে ব্যবস্থা তাদেরকে মুক্ত বাজার অর্থনীতি থেকে সুরক্ষা দিয়ে আসছিল, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে ভারতের কৃষি খাতে কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হতে পারে। তখন আরও কম মূল্যে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হবেন কৃষকেরা।