যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী জো বাইডেন প্রচারের সময় করা অঙ্গীকারে অটল থাকলে দুই দেশের সমস্যা সমাধান সহজ হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
স্থানীয় সময় বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওই সময় বাইডেন সরকার ট্রাম্পের ইরান নীতির নিন্দা জানিয়ে দেশটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রুহানি বলেন, ‘ট্রাম্পের হারের পেছনে কাজ করেছে তার ভুল পররাষ্ট্রনীতি, ভুল স্বাস্থ্যনীতি ও বর্ণবাদী সামরিক পদক্ষেপ। তিনি সবার অনাস্থার পাত্র ছিলেন।
‘আল্লাহকে ধন্যবাদ, যুক্তরাষ্ট্র এবং এ অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) জনগণ অনিষ্টকারীর হাত থেকে মুক্ত হয়েছেন। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পাঁচ বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক সহায়তা পর্যন্ত তিনি (ট্রাম্প) আটকে দিয়েছিলেন।’
রুহানি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী সরকার ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের নীতির স্পষ্ট নিন্দা জানাবে। পাশাপাশি গত চার বছরের ভুল নীতি সংশোধন করবে।’
এর আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা ও ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া অনেক কঠিন বলে মন্তব্য করেছিলেন ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
মন্ত্রিসভায় দেয়া বক্তব্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পারস্পরিক সম্মান ও ট্রাম্পের ইরান নীতি থেকে দূরত্ব বজায় রাখলে এবং নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হলে দুই দেশের সমস্যা সমাধান সহজ হবে।
অন্যদিকে খামেনি বলছেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পথ পরিষ্কার হয়নি। বছরের পর বছর ধরে চলা সমঝোতা আলোচনার নিষ্পত্তিও হয়নি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে দ্রুত উদ্যোগের সম্ভাবনা কম।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, নীতিগত ভিন্নতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে ইরানের দুই নেতার অবস্থান দুই রকম হতে পারে। আবার পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরকে ন্যায্যতা দিতে রুহানি এই অবস্থান নিতে পারেন।
পরমাণু চুক্তি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত রুহানির রাজনৈতিক শত্রুদের খুশি করে, যার প্রভাব আগামী বছরের জুনে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পড়তে পারে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার সংলাপে অগ্রগতি হলে তা সংস্কারপন্থি প্রার্থীদের সুবিধা করে দিতে পারে।