একদিন আগে ২৪ নভেম্বর ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছিল, বিয়ের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ের সম্মতিই যথেষ্ট। সেখানে ধর্মের বিভেদ নেই।
সংবিধান অনুসারে আদালত জানিয়েছিল, সবারই নিজের মতো করে জীবন কাটানোর অধিকার রয়েছে। কিন্তু সেসব কথার কোনও গুরুত্ব নেই বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথের সরকারের কাছে।
‘লাভ জেহাদ’ নিয়ে বিজেপির বক্তব্য নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার মধ্যেই উত্তরপ্রদেশে নতুন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
হিন্দু-মুসলমান ছেলেমেয়েদের প্রেমকে ‘লাভ জেহাদ’ নামে অভিহিত করে আসছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। তাদের অভিযোগ, প্রেমের নামে ভারতের মুসলমানরা হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করছে।
‘অবৈধ ধর্মান্তর প্রতিরোধ অধ্যাদেশ-২০২০’ এ বলা হয়েছে, মিথ্যা বলে, জোর করে বা শুধু বিয়ের জন্যই করা ধর্মান্তর অপরাধ বলে গণ্য হবে।
সেখানে আরও বলা হয়েছে, যদি কেউ বিয়ের পর ধর্মান্তরিত হতে চান, তাহলে তাকে বিয়ের অন্তত দুমাস আগে স্থানীয় জেলা প্রশাসককে জানাতে হবে। ধর্মান্তর যে জোর করে বা বিয়ের জন্য করা হয়নি তা প্রমাণের দায়িত্বও ধর্ম বদলাতে চাওয়া ব্যক্তির। এই অধ্যাদেশের আওতায় যে মামলা হবে সেগুলোতে জামিনের কোনো ব্যবস্থা নেই।
যোগী আদিত্যনাথ সরকারের মন্ত্রী সিদ্ধার্থ নাথ সিং এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন, ‘যদি কেউ বিয়ে করার জন্য ধর্ম বদল করতে চান, তা হলে তাকে জেলাশাসকের কাছে দুই মাস আগে আবেদন জানাতে হবে। তিনি অনুমতি দিলে ধর্ম পরিবর্তন করা যাবে।’
তবে এই অনুমতি কতটা পাওয়া যাবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বিরোধী নেতাদের। আইনশৃঙ্খলার অজুহাত দেখিয়ে অনুমতি না দেয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে সিদ্ধার্থ নাথও দাবি করছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়, বিশেষত মেয়েদের, দলিত ও আদিবাসীদের ভালোর জন্য এই অধ্যাদেশ জরুরি ছিল।
সিদ্ধার্থ নাথ সিং জানিয়েছেন, তাদের কাছে জোর করে ধর্মান্তরিত করার প্রায় ১০০ মামলা এসেছিল।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, জোর করে ধর্মান্তরিত করলে পাঁচ বছরের জেল বা ১৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে। প্রান্তিক সম্প্রদায়ের কোনো নারীকে জোর করে ধর্মান্তরিত করলে ১০ বছরের জেল এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানা।
মিথ্যা কথা বলে, প্রলোভন দেখিয়ে একসঙ্গে অনেককে জোর করে ধর্মান্তরিত করলে ১০ বছরের জেল এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে।