বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখের আগদাম জেলায় প্রায় ৩০ বছর পর আজারবাইজানের সেনা প্রবেশ করেছে।
শুক্রবার আজারবাইজানের সেনাবাহিনী এ তথ্য জানায় বলে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটির সেনাবাহিনীর কয়েকটি ইউনিট আগদাম অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। প্রায় ৩০ বছর ধরে অঞ্চলটি আর্মেনিয়ার বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
সাম্প্রতিক যুদ্ধে নাগোরনো-কারাবাখের প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ অঞ্চল দখল করে আজারবাইজান। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় গত সপ্তাহে স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তিতে ঐতিহাসিক শহর শুশাসহ ওইসব অঞ্চল আজারবাইজানকে ফিরিয়ে দিতে সম্মত হয় আর্মেনিয়া।
চুক্তি অনুযায়ী আরও দুইটি অঞ্চল আজারবাইজানের কাছে হস্তান্তর করেবে আর্মেনিয়া। এদের মধ্যে ২৫ নভেম্বর নাগোরনো-কারাবাখ ও আর্মেনিয়ার মধ্যকার কালবাজার জেলা ও ১ ডিসেম্বর লাচিন জেলার নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয়া হবে।
গত রোববার হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ‘মানবিক’ বিবেচনায় আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ হস্তান্তর প্রক্রিয়া এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদক ওসামা বিন জাভাইদ জানান, আগদাম অঞ্চলের আকৃতি প্রায় নাগোরনো-কারাবাখের কাছাকাছি। হস্তান্তরের পর আগদাম এখন ভূতের শহরে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নাগোরনো-কারাবাখের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ছিল আগদাম। প্রায় দুই লাখ মানুষ বাস করতেন এখানে। তারা সবাই বাড়িঘর ছেড়ে আজারবাইজানে চলে গেছেন।
‘আগদামে ফিরতে চান এমন অনেকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। কিন্তু অঞ্চলটিকে তারা আর নিরাপদ মনে করছেন না।’
তিনি বলেন, ‘আর্মেনিয়ার সব যোদ্ধা ওই অঞ্চল ছেড়ে চলে গেছে, তা আজারবাইজান সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। মাইন ও অবিস্ফোরিত যুদ্ধোপকরণমুক্ত করতে হবে অঞ্চলটিকে যাতে মানুষ ফিরে এসে নতুন করে জীবনযাত্রা শুরু করতে পারেন।’
আন্তর্জাতিক আইনে নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগত আর্মেনীয়রা দীর্ঘদিন ধরে ওই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে।
১৯৯৩ সাল থেকে আজারবাইজানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আগদাম জেলার বেশির ভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে আর্মেনিয়ার বিদ্রোহীরা।