আফগানিস্তানের ৩৯ বেসামরিক নাগরিককে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে অস্ট্রেলিয়ার স্পেশাল ফোর্সের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক তদন্ত প্রতিবেদনে এ অভিযোগ উঠে আসে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার এলিট স্পেশাল এয়ার সার্ভিসেস অ্যান্ড কমান্ডোস রেজিমেন্টের ছোট একটি দল আফগান বেসামরিকদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। কয়েকটি ক্ষেত্রে হত্যাকাণ্ড যুক্তিসঙ্গত ছিল দেখাতে মৃতদেহের কাছে ফোন, রেডিও ও অস্ত্র রাখে তারা। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে তদন্ত করেন মেজর জেনারেল জাস্টিস পল ব্রেরেটন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর এসব কর্মকাণ্ডকে ‘লজ্জাকর ও বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন ব্রেরেটন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশ কিছু বেআইনি হত্যাকাণ্ডের জন্য স্পেশাল ফোর্স দায়ী। ইচ্ছাকৃতভাবে এসব হত্যাকাণ্ড গোপন করা হয়। স্পেশাল ফোর্স সরাসরি বা নির্দেশমতো ২৩টি ঘটনায় ৩৯ আফগানকে হত্যা করে। কোনো হত্যাকাণ্ড যুদ্ধের সময় হয়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কোনো জুরি যদি সম্মত হয়, তাহলে এসব হত্যাকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়বে। নিহতরা কেউই যোদ্ধা ছিলেন না বা থাকলেও ওই সময় ছিলেন না। সব মিলিয়ে ২৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে কয়েকজন এখনও অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্সে (এডিএফ) কর্মরত আছেন।
এদিকে এডিএফের প্রধান জেনারেল আনগাস ক্যাম্পবেল ব্রেরেটনের ‘লজ্জাজনক’, ‘বিব্রতকর’ ও ‘ভয়াবহ’ প্রতিবেদন নিয়ে পদক্ষেপ নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সেনাদের অন্যায়ের জন্য ডিফেন্স ফোর্সের পক্ষ হয়ে আফগানিস্তানবাসীর কাছে আন্তরিকভাবে ও অকপটে ক্ষমা চাইছি।
‘...অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্সের সদস্যদের কৃতকর্মের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুংখিত। তবে স্পেশাল ফোর্সের বেশির ভাগ সদস্য এই বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন।’
তবে ব্রেরেটনের প্রতিবেদন পুরো ঘটনায় ডিফেন্স ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের রেহাই দিয়েছে। বলা হয়েছে, নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা তথা সাজেন্ট বা করপোরালরা হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটায় ও গোপন করে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে ফোন করে প্রতিবেদনের বিষয়ে ‘গভীর শোক’ প্রকাশ করেছেন।
অস্ট্রেলিয়া ‘ন্যায়বিচার নিশ্চিত’ করবে জানিয়ে ঘানিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছে বলেও জানায় আফগান প্রেসিডেন্টের দফতর।