দখলকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশ সম্প্রসারণে ইসরায়েলের পরিকল্পনার পর দেশটির সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করে দিয়েছিল ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ (পিএ)। সেটি আবার শুরু হচ্ছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার পিএর বেসামরিক কার্যক্রমবিষয়ক মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হুসেইন আল-শেখ এক টুইটবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
হুসেইন বার্তাটিতে বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক লিখিত ও মৌখিক চিঠি পাওয়ার পর ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আগের অবস্থায় ফিরবে। চিঠিতে আগের চুক্তিগুলো মানার অঙ্গীকার করেছে ইসরায়েল।’
পশ্চিম তীরের কিছু অংশ সম্প্রসারণে ইসরায়েলের পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের মে মাসে আব্বাস জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাক্ষরিত কোনো চুক্তি মেনে চলতে ফিলিস্তিন আর বাধ্য নয়। নিরাপত্তা সহযোগিতা সংক্রান্ত অন্য সহযোগিতা স্থগিতেরও ঘোষণা দেন তিনি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সিদ্ধান্তটি ফিলিস্তিনের অন্য বিরোধী দলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পিএর চেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদক হ্যারি ফসেট বলেন, ‘ফিলিস্তিনের হামাস ও অন্য সংগঠন এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। দখলদার এক শক্তির সঙ্গে ফিলিস্তিন ফের সহযোগিতায় ফিরছে বলে জানায় তারা। এতে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাব্য আলোচনা, ফিলিস্তিন অধিকৃত অংশে সম্ভাব্য নির্বাচন নাও হতে পারে।’
অবৈধ সব স্থাপনাসহ পশ্চিম তীরের এক-তৃতীয়াংশ সম্প্রসারণে ইসরায়েলের প্রস্তুতির সময় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে ওই সম্প্রসারণ প্রকল্পে হাত দেয় ইসরায়েল।
নব্বইয়ের দশকে দুই দেশের অন্তর্বর্তী শান্তি চুক্তিতে ইসরায়েলের পাশে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র সৃষ্টির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়।
আরব দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্তে দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), বাহরাইন, সুদান অধিকৃত অঞ্চল থেকে ইসরায়েলের প্রত্যাহার ও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছিল।
কিন্তু এ বছর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকের বিষয়ে সম্মত হয় ইউএই। পরে বাহরাইন, সুদানও ইউএইর পথ ধরে।
সম্পর্ক স্বাভাবিকে ইউএই সম্মত হওয়ার পর আগস্টে পশ্চিম তীরে সম্প্রসারণকাজ স্থগিত করে ইসরায়েল। তবে স্থগিতাদেশ সাময়িক বলে জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
দেশ তিনটির ওই সিদ্ধান্তকে ‘পিঠে ছুড়ি’ বসানোর মতো মনে করে ফিলিস্তিনিরা। তাদের ভাষ্য, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের স্বীকৃতির আন্দোলনে এটি এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।