বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিহারে পরাজয়ে কংগ্রেসে কলহ

  •    
  • ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ১৪:২৩

কংগ্রেসের জোটে একই সঙ্গে শুরু হয়েছে শরিকি লড়াই। আবার কংগ্রেসের ভেতরে নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বর্ষীয়ান নেতারা।

সোমবার পাটনায় জেডিইউর শীর্ষ নেতা নীতিশ কুমার যখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিচ্ছিলেন, তখন বিরোধী মহাজোটে চলছিল তীব্র শরিকি লড়াই। এবং শুধু শরিকি লড়াই নয়, মহাজোটের অন্যতম দল কংগ্রেসের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব আবার প্রকাশ্যে এসে গেছে বিহার নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে।

শরিকি লড়াই ও কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের উপলক্ষ ও নিশানার মধ্যে যোগসূত্রতা লক্ষ্যণীয়। উপলক্ষ বিহার বিধানসভার সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনী ফলাফল, সোনিয়া-রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব।

মহাজোটের প্রধান দল আরজেডির প্রবীণ নেতা শিবানন্দ তেওয়ারি রাজ্যে সরকার গঠন করতে না পারার কারণ হিসাবে কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘যখন নির্বাচন হচ্ছে, রাহুল গান্ধী তখন সিমলায় প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে পিকনিক করছেন!'  

আবার কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা কপিল সিবাল বলেছেন, ‘যে সব রাজ্যে বিকল্প হিসেবে মানুষ আমাদের চাইছেন, আমরা তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি।’ কংগ্রেসের মধ্যে বিকল্প নেতৃত্বের দাবি জানিয়েছেন তিনি। 

বিহার নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পেয়েছে ১২৫টি আসন। আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাজোট ১১০টি। তার মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ১৯টি।

শিবানন্দ তিওয়ারির অভিযোগ, ‘একটা দল চালাতে গেলে অনেক দায়িত্ব নিতে হয়। কিন্তু বিহার নির্বাচনে যে ভূমিকায় রাহুল গান্ধীকে দেখা গেল, তা মোটেই কাম্য ছিল না। এভাবে কি কোনো জোট চালানো সম্ভব? আমরা ৭৫টি আসন পেয়ে প্রথম দল হিসেবে উঠে এলাম। তারপরই ৭৪টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। বামেরাও আগের বারের তিনটি থেকে আসন বাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে ১৬-তে। কংগ্রেস যদি আরও গুরুত্ব দিয়ে এই নির্বাচনে লড়াই করত, তাহলে আজ বিহারে মহাজোটেরই সরকার হতো।’  

শিবানন্দ তিওয়ারির অভিযোগ, বিহারে ৭০ জন প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। অথচ ৭০টি জনসভাও করেনি তারা। রাহুল গান্ধী মাত্র তিন দিন এসেছিলেন ভোট প্রচারে। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী তো আসেনইনি। অথচ এই রাজ্যের সঙ্গে যারা পরিচিত নন, তাদেরই পাঠিয়ে দিয়ে দায়সারা কাজ করেছে কংগ্রেস। এটা করা উচিত হয়নি কংগ্রেসের।’

শরিক আরজেডির সমালোচনায় বিব্রত কংগ্রেস নেতৃত্বের বিড়ম্বনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন দলের রাজ্যসভা সদস্য কপিল সিবাল। দলে আগাপাশতলা সংস্কারের পক্ষে কথা বলার পাশাপাশি শীর্ষ নেতৃত্বে বদলের দাবি আবার তুলেছেন এই বর্ষীয়ান আইনজীবী নেতা। দলীয় সংগঠনের পুনর্মূল্যায়ন, অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা, শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব বদলের মতো একাধিক দাবি তুলে সরব সিবাল। কাঠগড়ায় তুলেছেন নেতৃত্বের গাছাড়া মনোভাবকেও।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সিবালের নিশানায় মূলত গান্ধী পরিবার। নেতৃত্বের গাছাড়া মনোভাবের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘দলের মধ্যে এমন একটা মনোভাব, যেন কিছুই হয়নি।’

সিবাল বলেছেন, ‘সাংগঠনিক, সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা, যাদের কথা মানুষ শুনতে চায়, তাদের তুলে আনা, সক্রিয় নেতাদের কাজে লাগানোর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের নানা সংস্কারের কাজ করতে হবে।’

একাধিক রাজ্যের উপনির্বাচনেও আশানুরূপ ফল নেই কংগ্রেসের। এ নিয়ে মুখ খুলে সিবাল বলেন, ‘যে সব রাজ্যে বিকল্প হিসেবে মানুষ আমাদের চাইছে, আমরা তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি।' তিনি বলেন,"অন্তর্দ্বন্দ্ব, আলোচনা-পর্যালোচনার আর কোনো জায়গা নেই। কংগ্রেসকে সাহসী হতে হবে।"   

উল্লেখ্য ,গত আগস্টে কপিল সিবাল, শশী থারুর, গুলাম নবি আজাদের মতো নেতারা দলকে চিঠি লিখে এক গুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছিলেন। শীর্ষ নেতৃত্বে রদবদল, দলকে নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করার মতো নানা পরামর্শ ছিল সেই চিঠিতে। সেই সময় আবার সিবালের সঙ্গে বিজেপির ‘সখ্য' নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল।

সেই সম্ভাবনা আগেও উড়িয়ে দিয়েছেন বর্ষীয়ান এ সাংসদ। তা হলে দলের মধ্যে থেকেও সমালোচনা কেন? সিবালের যুক্তি, ‘দলে কোনো আলোচনা নেই, আলোচনার চেষ্টা পর্যন্ত নেই। তাহলে আমার মতামত জানাব কোথায়? তাই বাধ্য হয়ে সর্বসমক্ষেই মুখ খুলতে হয়।’

বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে সিবা বলেন, ‘আমি আদ্যোপান্ত কংগ্রেসম্যান এবং সেটাই থাকব। তবে আশা করব, কংগ্রেস তার ক্ষমতার বিকল্প উৎস সন্ধান করবে। আগে আমাদের পর্যালোচনা করতে হবে, অভিজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। যারা বোঝেন, দেশের কী অবস্থা, তাদের মতামত নিতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর