করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আরও বেশ কয়েকটি অঞ্চলকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রেড জোনে অন্তর্ভুক্ত করেছে ইতালি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রেড জোনে অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে ইতালির ক্যাম্পেনিয়া, তাসকানিকেও যুক্ত করা হয়েছে। রোববার থেকে অঞ্চল দুটিতে কঠোরতম লকডাউন কার্যকর হবে।
ক্যাম্পেনিয়ার কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে জানায়, স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ার মুখে।
শুক্রবার ইতালিতে দৈনিক সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ৯০২ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়। এরপর দেশটির কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।
হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হলুদ জোনে থাকা ক্যাম্পেনিয়াকে লাল জোনে নেয়া হয়েছে।
শুক্রবার ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইগি দি মাইয়ো বলেন, ‘ক্যাম্পেনিয়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। জরুরি বিধিনিষেধ দরকার...মানুষ মরছে।’
ইতালি সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পরামর্শক ওয়াল্টার রিচার্দি বলেন, ‘ফের জাতীয় লকডাউন ঘোষণা করা হবে কি না, এ সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের হাতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় আছে।’
ইতালির নেপলস শহরের হাসপাতালগুলোর ভয়াবহ চিত্র প্রচার করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। জরুরি বিভাগে জায়গা না থাকায় হাসপাতালের বাইরে অক্সিজেন ট্যাঙ্ক ও অন্য সরঞ্জাম দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, নেপলসের কারদারেলি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টয়লেটে এক সন্দেহভাজন বয়স্ক করোনা রোগী মরে পড়ে আছে।
বছরের শুরুতে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনা মহামারির কেন্দ্রস্থল ছিল ইতালি। ওই সময় দেশটিতে জাতীয় লকডাউন আরোপ করে সংক্রমণ অনেক নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
বিধিনিষেধও ধীরে ধীরে শিথিল করা হয়। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করে।
দ্বিতীয় ধাক্কার সংক্রমণ ঠেকাতে লাল, কমলা ও হলুদ জোনে ইতালিকে ভাগ করা হয়। এই মুহূর্তে লম্বারদি, বলজানো, পিয়েদমন্ট ও আওস্টা ভ্যালি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ লাল জোনে আছে।
ওই সব অঞ্চলের ১৬.৫ মিলিয়ন বাসিন্দা শুধু কর্মস্থল, চিকিৎসা, দরকারি কেনাকাটা বা জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হতে পারেন। বার ও রেস্তোরাঁ বন্ধ। তবে লোকজন মাস্ক পরে ঘরের কাছে শরীরচর্চা করতে পারেন।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইতালিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ সাত হাজার ৩০৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন; মৃত্যু হয়েছে ৪৪ হাজার ১৩৯ জনের।