অবিবাহিত জুটিদের একসঙ্গে বসবাস করার (লিভ টুগেদার) ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকছে না সংযুক্ত আরব আমিরাতে। উঠে যাচ্ছে মদের ওপর নিষেধাজ্ঞাও। তাছাড়া পরিবারের 'সম্মানহানির' নামে নারী সদস্যকে হত্যা করা হলে হত্যাকারীকে লঘু শাস্তির দেয়ার বিধানও বন্ধ হচ্ছে।
সেই সঙ্গে দেশটিতে বসবাসকারী বিদেশিরা বিয়েবিচ্ছেদ ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত ব্যাপারে নিজ নিজ দেশের আইন মেনে চলতে পারবেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম এ কথা জানিয়েছে।
উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে হোটেল-রেস্তোরাঁয় মদ বিক্রি হলেও তা কিনতে হলে লাইসেন্স লাগে। দেশের মুসলমান নাগরিকেরা এ লাইসেন্স পান না। আইন সংশোধন হলে তারাও মদ কিনতে, পান করতে ও বাসায় রাখতে পারবেন।
এসব আইনি পরিবর্তন আন্তর্জাতিকভাবে একটি সহনশীল দেশ হিসেবে আরব আমিরাতের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী বছর দুবাইতে ‘ওয়ার্ল্ড এক্সপো’ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, যাতে সারা বিশ্বের আড়াই কোটি অতিথির সমাগম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অতিকায় ইভেন্টকে সামনে রেখে আরব আমিরাত সরকার আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিকভাবে নিজেকে একটি আধুনিক ব্যাবসায়ী দেশ এবং পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। দেশটির আইনকানুন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মতো কড়া রক্ষণশীল হলেও পর্যটকদের ওপর কখনই সেসব আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয় না। দেশটিতে অভিবাসী নাগরিকের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি নয় জনের এক জন অভিবাসী।
দেশটির চলচ্চিত্র নির্মাতা আবদুল্লাহ আল কাবি বলেন, 'এসব প্রগতিশীল ও সক্রিয় নতুন আইনের উদ্যোগে আমার চেয়ে খুশি আর কেউ নয়। ২০২০ সাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য একটি কঠিন ও রূপান্তরমূলক বছর।'
আবদুল্লাহ সমকামী প্রেম এবং লিঙ্গ পরিচয়ের মতো এমন সব বিষয় নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করেন, যেগুলো নিয়ে দেশটিতে প্রকাশ্যে আলোচনা করা হয় না।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রথ এই পরিবর্তনগুলিকে 'নারীর অধিকারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ' হিসেবে বর্ণনা করেন।