বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পণ্যমূল্যে নাভিশ্বাস কলকাতায়

  •    
  • ৫ নভেম্বর, ২০২০ ১৫:০৭

আলুর দাম ৪০ থেকে ৪৫ রুপি প্রতি কেজি; পেঁয়াজ ১০০। কাঁচা মরিচ ১৫০, টমেটো ৮০। পেঁয়াজ কলির দাম ১৫০ টাকা কেজি। ফুল বা বাঁধা কপি এখন বাজারে ৫০ রুপির কমে মেলে না। কাঁচা পেঁপেই বিক্রি হচ্ছে ৪০ রুপি কেজি দরে।

কলকাতার বাঙালির দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় উৎসব কালী পূজা বা দীপাবলীর আগে সবজির বাজারে আগুন। আলু থেকে ধনে পাতা, শীত পড়লেও দাম কমার কোনও ইঙ্গিত নেই। মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছেন।

বুধবার সকালে কলকাতার উপকণ্ঠে দমদম বা নাগেরবাজারে আলু বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ রুপি প্রতি কেজি। পেঁয়াজ ১০০।

কাঁচা মরিচ ১৫০, টমেটো ৮০। শীতের সব সবজিই বাজারে রয়েছে। পেঁয়াজ কলির দাম ১৫০ টাকা কেজি। ফুল বা বাঁধা কপি এখন বাজারে ৫০ রুপির কমে মেলে না। কাঁচা পেঁপেই বিক্রি হচ্ছে ৪০ রুপি কেজি দরে।

বিলাসবহুল শপিং মলে আরও বেশি দাম আলু-পেঁয়াজের। বাগুইহাটি, শিয়ালদার বৈঠকখানা বা অন্যান্য বাজারের ছবিটাও প্রায় একই।

ফলে ক্ষোভ বাড়ছে সর্বত্র। এই অবস্থায় আফগানিস্তান থেকে পেঁয়াজ ও ভুটান থেকে আলু আমদানি করেছে ভারত। কিন্তু তাতেও দাম কমেনি।

পেঁয়াজ নিয়ে জনগণের ক্ষোভের আঁচ পেলেন বিহারে বিজেপির বন্ধু মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। ভোট প্রচারে নেমে হজম করতে হলো আস্ত পেঁয়াজ। জনসভায় এক দর্শক ক্ষোভ জানাতে পেঁয়াজ ছুড়ে মারেন।

আর এটা জানতে পেরেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি পাল্টা কটাক্ষ করেন সামাজিক মাধ্যমে। তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম অনেক। এটা ছুঁড়ে মারা ঠিক নয়। শারীরিক আক্রমণেরও প্রয়োজন নেই।’

কলকাতায় অবশ্য পেঁয়াজ ছোড়ার ঘটনা নেই। তবে কটাক্ষ আছে। বিশিষ্ট সমাজসেবী ইমানুল হক সামাজিক গণমাধ্যমে ব্যঙ্গ করে লেখেন, ‘আজ একটা আস্ত পেঁয়াজ খেলাম।’

ব্যস্! শুরু হয়ে যায় পেঁয়াজ নিয়ে হাজারো ‘পেঁয়াজি’! তবে এবার এখনও পেঁয়াজের মালা পরে প্রতিবাদ তেমন একটা শোনা যাচ্ছে না। ক্ষোভ সব আছড়ে পড়ছে সামাজিক গণমাধ্যমে।

সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। সেদিকে লক্ষ্য রেখে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা নিয়ে সরকারি সাফাইয়ে অভাব নেই। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন সচেষ্ট।

কিন্তু ক্রেতারা ক্ষিপ্ত সরকারের ওপর।

বাগুইহাটি থেকে গৃহবধূ সম্রাজ্ঞী রায় বলেন, ‘কোথাও কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যা পারছে নাম নিচ্ছে। সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন। আলুর পেঁয়াজের দাম তো বেড়েই চলেছে।’

দমদম স্টেশন বাজারের অজয় সাহা বলেন, ‘গরিব বা সাধারণ মানুষের কথা ভাবার সময় কোথায় সরকারের! কৃষক ফসলের দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করছেন। আর সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে সবজি কিনতে। লাভ করছেন ফঁড়িয়ার দল।’

খুচরা বিক্রেতারা দুষছেন পাইকারদের। বাবাই সাহা বলেন, ‘আমাদের মাল কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। কী করব? সামান্য লাভেই মাল বিক্রি করতে হচ্ছে। তবু লোকে বলছেন দাম বেশি।’

পাইকারি দোকানদার জীবন নাহার মন্তব্য, ‘আমরাই কিনছি আলু প্রায় ৪০ টাকা করে। পেঁয়াজ ৯০-এর কমে মিলছে না। কিছু করার নেই। বরং আরও বাড়বে দাম।’

বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদারের অভিযোগ, ‘দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ তৃণমূল সরকার। মমতা ব্যানার্জির দলই গরিবের মুখের গ্রাস কেড়ে নিচ্ছে। অথচ কেন্দ্রের মোদি সরকার জনকল্যাণে সবচেষ্টাই চালাচ্ছেন। রাজ্যবাসী তৃণমূলের কারণেই বঞ্চিত।’

সিপিএম ও কংগ্রেসের জোট আবার তৃণমূল ও বিজেপি দু-দলকেই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী করেছে। তাদের মতে, বড়লোকেদের তোষণ করতে গিয়ে চাষি বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে দালাল ও পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণের ভার।

‘আনাজের মূল্য বৃদ্ধির ফায়দা নিতে ব্যস্ত সব দলই। সামনে ভোট। তাই চলছে দাবি আর পাল্টা দাবি। কিন্তু দাম সেই ঊর্ধ্বমুখী। নামার কোনও লক্ষণ নেই। সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ’, বলেন মুকুল ভৌমিক।

এ বিভাগের আরো খবর