শেষ মুহূর্তের নির্বাচনি প্রচারণায় আরও বেশি আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে রক্ষণাত্মক ছিলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন।
করোনা মহামারির মধ্যেই এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ।
ভোটারদের এতটা দ্বন্দ্বে পড়তে হয়নি আগে কখনও। কেননা একেবারেই আলাদা ও বিপরীত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধান দুই প্রার্থী। মহামারির কারণে সামনে এসেছে দেশটির অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও জাতিগত ইস্যুগুলো।
তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পেনসিলভানিয়ায় ভোট গণনায় নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বিলম্ব হলে আইনি ব্যবস্থার হুমকি দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প।
অন্য এক টুইটবার্তায় নির্বাচন সংক্রান্ত সহিসংতার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। যদিও এমন কোন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বাইডেন বলেন, এখনই কিছু বলতে চান না তিনি।
বাইডেন জানান, কেবল নির্বাচন নিয়েই ভাবছেন তিনি এবং সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচনের অপেক্ষা করছেন।
এর আগে পিটসবার্গে এক বক্তৃতায় কৃষ্ণাঙ্গদের উদ্দেশে ভোটাধিকার নিয়ে কথা বলেন বাইডেন। তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাম্পের বিশ্বাস কেবল ধনীদেরই আছে ভোটের অধিকার।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ট্রাম্পের অবহেলার কারণে ব্যাপক হারে কৃষ্ণাঙ্গদের মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন এই ডেমোক্র্যাট নেতা।
কৃষ্ণাঙ্গ সমর্থকদের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, ‘আমরা হট্টগোল দেখেছি, টুইটবার্তা দেখেছি; ক্ষোভ, ঘৃণা, ব্যর্থতা, দায়িত্বহীনতা সবই দেখেছি। এখন সময় ব্যালটের মাধ্যমে এসবের জবাব দেয়ার।’
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী দুই শিবিরই। যদিও বিভিন্ন জরিপে বলছে, বাইডেনের পক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা তেমন একটা নেই।
শেষ নির্বাচনি প্রচারণায় সোমবার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য চষে বেড়িয়েছেন ট্রাম্প। এদিন নর্থ ক্যারোলাইনা থেকে পেনসিলভানিয়া হয়ে উইসকনসিন পর্যন্ত পাঁচটি সমাবেশে বক্তব্য দেন তিনি।
অন্যদিকে নির্বাচনি প্রচারণার অধিকাংশ সময়ই পেনসিলভানিয়ায় ব্যয় করেছেন বাইডেন। কেননা এই অঙ্গরাজ্যের ভোটেই নির্ধারিত হতে পারে ফল। এ ছাড়া গত নির্বাচনে ট্রাম্পের ৮ শতাংশ বেশি ভোটে জয়ী হওয়া ওহাইয়ো অঙ্গরাজ্যেও সময় দিয়েছেন বাইডেন।
পুরো প্রচারণায় করোনাভাইরাসকেই গুরুত্ব দিয়েছেন সাবেক এই ভাইস-প্রেসিডেন্ট। তিনি ঘোষণা দেন, ‘ভাইরাসকে মোকাবিলার প্রথম পদক্ষেপ হলো, ট্রাম্পকে মোকাবিলা করা।’
শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচিকে পদে বহাল রাখারও প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
সোমবার মিশিগান ও স্ক্রানটনে জনসভায় বক্তব্য দেন ট্রাম্প। সেখানে নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনজীবীদের নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
কোনো ধরনের অনিয়ম হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া পেনসিলভানিয়ায় ভোট গণনার সময় বৃদ্ধি সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের বিষয়েও নেতিবাচক মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘অত্যন্ত ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে…ভীতিকর মানে শারীরিকভাবে ভীতিকর। তারা (ডেমোক্র্যাট সমর্থক) খুবই নাজুক পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যা অঙ্গরাজ্যের জন্য অত্যন্ত খারাপ।’