ফ্রান্সের নিস শহরে নটর ডেম গির্জায় ছুরি নিয়ে হামলা চালানোর ঘটনায় আটক তিউনিশিয়ার নাগরিক ব্রাহিম আউইসাউই অক্টোবরের শুরুতে ফ্রান্সে এসেছিলেন বলে দেশটির বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে একটি সূত্র।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রটি বলছে, তিনি ইতালির লেমপেডুসা দ্বীপ থেকে অবৈধভাবে থেকে ফ্রান্সে ঢোকেন।
শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দি গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২১ বছর বয়সী ব্রাহিম আউইসাউই তিউনিশিয়ার নাগরিক বলে জানিয়েছেন ইতালির সিসিলি প্রদেশের সরকারি কর্মকর্তারা।
তারা গার্ডিয়ানকে জানান, ব্রাহিম ২০ সেপ্টেম্বর তিউনিশিয়া থেকে লেমপেডুসায় পৌঁছান। ধারণা করা হচ্ছে, ডিঙি নৌকায় সমুদ্র পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। একটি নৌকায় ব্রাহিমকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখে কর্তৃপক্ষ। ৯ অক্টোবর তিনি ইতালির মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন।
সিসিলির কর্মকর্তারা জানান, তিউনিশিয়া থেকে ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসী আসায় তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বেশি সময় লাগে। এ কারণে সাত দিনের মধ্যে ইতালি ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে তাদেরকে ‘এক্সিট স্লিপ’ দেয়া হয়।
এমন একটি ‘এক্সিট স্লিপ’ ব্রাহিমকেও দেয়া হয়েছিল। এরপর হয়ত অন্য অনেকের মতো তিনিও অবৈধভাবে ফ্রান্সে প্রবেশ করেন।
ফরাসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার সময় ব্রাহিমের কাছে কোনো পরিচয়পত্র ছিল না। তার কাছে ইতালিয়ান রেড ক্রসের একটি কাগজ পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইতালির কর্মকর্তারাও গার্ডিয়ানকে জানান, ব্রাহিমের কাছে কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। হামলার পরে ফরাসি পুলিশ তার ছবি প্রকাশ করে, যা তাদের কাছে থাকা ছবির সঙ্গে মিলে যায়।
ব্রাহিম ফ্রান্সে আসার পর কোনো ধরনের রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্যও আবেদন করেননি বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
এ বছরের শুরুতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইউরোপোলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো পদ্ধতিগত উপায়ে ‘অনিয়মিত অভিবাসন’ এর সুযোগ নিচ্ছে- এমন কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।
ব্রাহিম আউইসাউই বৃহস্পতিবার দেশটির নিস শহরের নটর ডেম গির্জায় ছুরি নিয়ে হামলা চালান বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় তিনজন নিহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ একে ‘ইসলামপন্থি সন্ত্রাসী’র মূর্খতা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
হামলার পরে ফ্রান্সজুড়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।