মুসলিম বিশ্বের রোষে পড়া ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর পাশে দাঁড়াল ভারত। বুধবার একটি বিবৃতি জারি করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণের নিন্দা করেছে দিল্লি।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানসহ অনেকেই। এরদোয়ানের মিডিয়া ডিরেক্টর বলেছেন, ‘এই ধরনের কার্টুন ইসলামোফোবিয়া তৈরি করবে। মনে হচ্ছে, ফ্রান্স সেটাই চাইছে। মাখোঁ ইসলামবিরোধী নীতি নিয়ে চলেছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এই ধরনের কার্টুন তারই ফসল। এটা ঘৃণা ছড়াবে।’
এই আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যেভাবে ও যে ভাষায় প্রেসিডেন্ট মাখোঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানো হচ্ছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি। এই আক্রমণ আন্তর্জাতিক আলোচনার সব নিয়ম লঙ্ঘন করছে।’
শুধু মাখোঁর সমর্থনই নয়, ফরাসি শিক্ষকের হত্যারও নিন্দা করেছে ভারত। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা ফরাসি শিক্ষকের নৃশংস হত্যার নিন্দা করছি। এই হত্যা পুরো আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে ধাক্কা দিয়েছে। তাঁর পরিবার ও ফ্রান্সের জনগণকে আমরা শোক জানাচ্ছি। কোনো পরিস্থিতিতেই সন্ত্রাসবাদী হামলার স্বপক্ষে যুক্তি খোঁজা উচিত নয়।’
এরপরই ভারতে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লেনাইন টুইট করে বলেছেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ। ফ্রান্স ও ভারত সব সময় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একসঙ্গে আছে। ভারত ও ফ্রান্স সবসময় একে অপরের উপর বিশ্বাস রেখে পদক্ষেপ নিতে পারবে।’
গত ১৬ অক্টোবর প্যারিসে এক শিক্ষককে শিরোশ্ছেদ করে খুন করে এক চেচেন জঙ্গি। ওই নৃশংস খুনের ঘটনাকে ‘ইসলামিক মৌলবাদের’ স্বরূপ বলে সমালোচনা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মত প্রকাশের অধিকারের পক্ষে। তা থেকে পিছিয়ে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওই শিক্ষককে ‘নায়ক’ বলে মন্তব্য করেন। হামলার ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদ’ ও ‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী হামলা’র মতো শব্দ ব্যবহার করেন তিনি। ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ফ্রান্সের ছবি কোনোদিন মলিন হতে দেবেন না বলে জানিয়েছিলেন মাখোঁ।
এরপরই এরদোয়ান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফরাসি প্রেসিডেন্টের তীব্র সমালোচনা করেন। তাদের অভিযোগ, মাখোঁ ইসলামোফোবিয়া তৈরি করছেন। আরব দেশে ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাকও দেয়া হয়েছে।