যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি বলেছেন, ‘নিরাপদ ও কার্যকর’ প্রমাণিত হলে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই দেশটিতে করোনাভাইরাসের টিকা পাওয়া যেতে পারে।
স্থানীয় সময় রোববার বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে ফাউচির উদ্দেশে সাংবাদিক অ্যান্ড্রু মার বলেন, ‘শেষ প্রেসিডেন্ট বিতর্কে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এ বছরের শেষে করোনার টিকা পাওয়া যাবে। ট্রাম্পের এই বক্তব্য জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।’
জবাবে ফাউচি বলেন, ‘আমি মনে করি, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন। টিকা নিরাপদ ও কার্যকর কি না, তা আমরা নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে জানতে পারব। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, নিরাপদ ও কার্যকর টিকা হাতে আসার পর কত দ্রুত তা আমরা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি।’
তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরে যে পরিমাণ ডোজ পাওয়া যাবে, তা দিয়ে নিশ্চিতভাবেই সবাইকে টিকা দেয়া সম্ভব হবে না। ২০২১ সালের বেশ কয়েক মাস আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে। সাধারণ মানুষ (যেমন: স্বাস্থ্যকর্মীরা) টিকা পাবেন।
‘পরে যারা করোনা জটিলতার বর্ধিত ঝুঁকিতে ভুগছেন, তাদের টিকা দেয়া হবে। এ বছরের শেষে তাদের টিকা দেয়া শুরু হতে পারে। কিন্তু মহামারি ঠেকাতে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব বিবেচনায় যখন দেশের জনসংখ্যার বড় অংশকে টিকার আওতায় আনার কথা বলা হচ্ছে, তা সামনের বছরের মাঝামাঝি বা শেষের আগে সম্ভব নয়।’
অ্যান্ড্রু বলেন, ‘আপনি আজকের আমেরিকায় বিজ্ঞানবিরোধী অবস্থানের কথা বলেছেন। এটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ যে, রাজনীতিবিদ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এ ক্ষেত্রে নজির স্থাপন করবেন ও বিজ্ঞানকে অনুসরণ করবেন?’
ফাউচি বলেন, ‘আমি মনে করি এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ করোনা পরিস্থিতি আমরা বুঝতে পারছি। রাজনীতিকরা কী বলছেন বা করছেন, তা মানুষ লক্ষ্য করেন। তারা ইতিবাচক বা নেতিবাচকভাবে মানুষের আচরণ প্রভাবিত করতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের যে বিষয়টি নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন, জনগণ বিশেষ করে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা বিজ্ঞানবিরোধিতাকে টিকাবিরোধী হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন। এটা লজ্জার বিষয় হবে, যদি আমাদের নিরাপদ ও কার্যকর টিকা থাকার পরও জনসংখ্যার একটি বড় অংশ টিকা নিতে রাজি না হন। কারণ তারা কর্তৃপক্ষকে বিশ্বাস করেন না। যদি তা হয়, বিষয়টি দুঃখজনক হবে।’
সূত্র: বিবিসি