বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় প্রতিমার হাত থাকে ১০টি। তবে ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় দুর্গাবাড়িতে দেবী দুর্গার প্রকাশ্য হাত দুটি। অন্য হাতগুলো থাকলেও দেখা যায় না।
ত্রিপুরার রাজ আমল থেকেই এভাবে দুর্গাপূজা হয়ে আসছে।
মণ্ডপের সরকারি পুরোহিত জয়ন্ত ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেবীর দশভুজা রূপ দেখে ভয় পেয়েছিলেন মহারানি। এরপর মহারানিকে দেবী দুর্গা দুই হাতের মূর্তি পূজার স্বপ্নাদেশ দেন। এরপরই এমন প্রতিমা তৈরি করা হয়।’
তিনি জানান, দেবীর আট হাত পেছনে লুকোনো থাকে। এ কারণে দেখা যায় না।
ত্রিপুরার দুর্গা বাড়ির পূজা আরও এক কারণে ব্যতিক্রম। ত্রিপুরার ভারতভুক্তি চুক্তির কারণে প্রতি বছর এখানে পূজার পুরো আয়োজন করে সরকার।
ত্রিপুরার মহারাজদের সঙ্গে ওই চুক্তি অনুযায়ী, রাজ আমলের প্রতিটি পরম্পরাই ত্রিপুরা সরকার মানতে বাধ্য। তাই পূজার পুরো আয়োজন ত্রিপুরা সরকারকেই করতে হয়।
এই মণ্ডপে দুর্গা পূজার আরেক আকর্ষণ ছিল মহিষ বলি। গত বছর থেকে আদালতের নির্দেশে পশু বলি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তবে আঁখ, চালকুমড়া, ডিম ও মদ বলি এখনও হয়।
পুরোহিত জয়ন্ত ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সাক্ত মতে পূজা হচ্ছে। নবমীর দিন দুর্গার জন্য মহিষ বলি দেয়া না হলেও ডিম, মদের মতো সামগ্রী বলি দেয়া হবে।
দুর্গা বাড়ির প্রতিমা বিসর্জনও দেয়া হয় রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করে। পুলিশ ব্যান্ডে দেশাত্মবোধক গানের সুর বাজিয়ে শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হয় দেবীকে। তারপর হাওড়া নদীতে দেয়া হয় বিসর্জন।
এদিকে করোনার কারণে এবার ত্রিপুরার দুর্গা বাড়ির পূজার জৌলুস অনেকটাই কম। দর্শনার্থীদের মন্দিরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। অন্যান্য অনুষ্ঠানের পরিসরও সীমিত করা হয়েছে।