জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ হত্যায় অভিযুক্ত তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস হ্যাসপিল নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার স্কাইপে যুক্ত হয়ে ম্যানহাটন আদালতের বিচারকের কাছে হ্যাসপিল এমন দাবি করেন।
ম্যানহাটন ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস জানায়, হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে প্রথম ও দ্বিতীয় মাত্রার হত্যা, দ্বিতীয় মাত্রার চুরি, লাশ গুমের চেষ্টা, প্রমাণ লোপাটের মতো কয়েকটি অভিযোগ আনেন গ্র্যান্ড জুরি।
তদন্ত নিয়ে অবগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, ফাহিমের আর্থিক ও ব্যক্তিগত দিকগুলো খেয়াল রাখতেন হ্যাসপিল।
তিনি জানান, ফাহিমের কাছ থেকে কয়েক হাজার ডলার ঋণ নিয়েছিলেন হ্যাসপিল। তিনি ঋণ ফেরত দেয়ার পরিকল্পনা করছিলেন।
হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে ফাহিমের কাছ থেকে পেপাল ও ইনটুইটের মাধ্যমে ১০ হাজার ডলার চুরির অভিযোগও আনা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, সিসিটিভি ভিডিওতে দেখা যায়, পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিহত হওয়ার পর সকালে ম্যানহাটনের একটি হার্ডওয়্যার দোকান থেকে বৈদ্যুতিক করাত ও পরিষ্কার করার জিনিস কিনছেন হ্যাসপিল। পরে ফাহিমের বিচ্ছিন্ন ধড়ের কাছাকাছি জিনিসগুলো পাওয়া যায়।
আদালতে দেয়া নথিতে ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টে থেকে একটি মাকিটা করাত, কাঁচি, একটি ছুরি, গ্লাভস ও একটি মুখোশ পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে একটি ব্যাগে তার মাথা ও দেহের খণ্ডিত অংশ পাওয়া গেছে।
হ্যাসপিলের আইনজীবী নেভিল মিশেল বলেন, ‘আমরা মৃত্যুর সময়কার পরিস্থিতি ও সেখানে হ্যাসপিলের জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে লড়ছি।’
মিশেল জানান, হ্যাসপিলকে রিকার্স দ্বীপে রাখা হয়েছে। মামলার শুনানি ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
পুলিশের ভাষ্য, ১৪ জুলাই ফাহিমের দেহ ম্যানহাটনে তার বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয়। তাকে হত্যা করা হয় ১৩ জুলাই। তাকে দেখতে গিয়ে তার বোন পরিস্থিতি পুলিশকে জানান।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান উদ্যোক্তার মাথা, হাত, হাঁটু থেকে পায়ের নিচের অংশগুলো কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। তাকে শেষবারের মতো লিফটে কালো পোশাক ও মুখোশ পরা একজনের সঙ্গে দেখা যায়।
মৃত্যুর আগে ম্যানহাটনে অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল নামে একটি মূলধন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফাহিম। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাকে ঘাড়ের দিকে পাঁচবার ছুরিকাঘাত করা হয়।
প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে কাজ করার জন্য সুপরিচিত ছিলেন ফাহিম। সৌদি আরবে জন্মগ্রহণ করা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ তরুণ ২০০৯ সালে ম্যাসাচুসেটসের বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন।
তিনি নাইজেরিয়ার রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘গোকাডা’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ছিলেন।
সূত্র: সিএনএন