করোনাভাইরাসে একজন ব্যক্তির দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা খুবই কম। এ ভাইরাসে দুইবার সংক্রমিত হওয়া বিভিন্ন লোকজনের মধ্যে করোনার মারাত্মক প্রভাবের কথাও শোনা যায়নি এতদিন। তবে যুক্তরাজ্যের নেভাদা অঙ্গরাজ্যের এক যুবকের ক্ষেত্রে দুটিই ঘটেছে।
ওই যুবকের প্রথমবারের তুলনায় দ্বিতীয়বারের সংক্রমণ অনেক বেশি বিপজ্জনক ছিল বলে চিকিৎসকদের গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
দ্বিতীয়বার আক্রান্তের পর হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল ২৫ বছর বয়সী যুবককে। সে সময় তার ফুসফুস পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাচ্ছিল না।
এখন তিনি সুস্থ।
‘ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেস’ নামের মাসিক সাময়িকীর ওই প্রতিবেদনে করোনার বিরুদ্ধে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা গড়ে ওঠে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে নেভাদার ওই ব্যক্তির শরীরে কোনো সমস্যা ছিল না বা রোগ প্রতিরোধে ঘাটতিও ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও তার করোনা হয়।
গবেষণায় ওই ব্যক্তির করোনা সংক্রান্ত ঘটনাক্রম তুলে ধরা হয়।
২৫ মার্চ: গলা ব্যথা, কফ, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়া।
১৮ এপ্রিল: পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ে।
২৭ এপ্রিল: প্রাথমিক উপসর্গ চলে যায়।
৯ ও ২৬ মে: দুইবারই করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে।
২৮ মে: ফের আগের উপসর্গ দেখা দেয়। এবার যুক্ত হয় জ্বর ও মাথা ঘোরা।
৫ জুন: পরীক্ষায় দ্বিতীয়বারের মতো করোনা শনাক্ত হয়। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় ও শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
গবেষকরা বলছেন, প্রথমবার আঘাতের পর করোনাভাইরাসটি সুপ্ত থাকায় ফের তা ওই ব্যক্তিকে আঘাত করে। দুইবারের উপসর্গের ওপর ভিত্তি করে ভাইরাসটির জিনগত কোড পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রথম ভাইরাস ও পরের ভাইরাসের স্বরূপ এক নয়; বরং স্বতন্ত্র।
নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক মার্ক পানডোরি বলেন, ‘গবেষণায় দেখা যায়, প্রথম সংক্রমণ ফের সংক্রমিত হওয়ার হাত থেকে শরীরকে রক্ষা নাও করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধ নিয়ে আমাদের বোঝাপড়ার জন্য ফের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কার তাৎপর্য থাকতে পারে।’
করোনা থেকে সুস্থ ব্যক্তিদের শারীরিক দূরত্ব, মাস্ক পরা, হাত ধোয়াসহ অন্যান্য নির্দেশনা মেনে চলা উচিত বলে মনে করেন পানডোরি।
সূত্র: বিবিসি