আর কয়দিন পরেই দুর্গা পূজা। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এই দুর্গা পূজা। কিন্তু এবার সেই উৎসবেও লেগেছে রাজনীতির রং।
সামনের বছরের শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট। তাই রাজ্যে এখন পূজার পাশাপাশি ভোটের আবহ। পূজাকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক তর্ক যুদ্ধ। হিন্দুত্ববাদী বিজেপি করোনাকালে দুর্গা পূজার আয়োজন করায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেছেন।
করোনার কারণে এবার ঈদসহ অন্যান্য উৎসব পালন স্থগিত করেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসহ গোটা ভারত।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবার রাজ্যে দুর্গা পূজার আয়োজন করছে। ইতিমধ্যেই পূজার উদ্যোক্তাদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।সেরা পূজার আয়োজকদের জন্য পুরস্কার দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। থাকছে করোনা সতর্কতার জন্যও পুরস্কার। এ ছাড়া এবছর থেকে চালু হচ্ছে পুরোহিত ভাতা।
বিজেপির অভিযোগ,এসবই ভোট কেনার বুদ্ধি। জনগণের টাকা পূজা কমিটিকে দেয়ার কড়া সমালোচনা করেছে তারা।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘আসলে দুর্গা পূজা বন্ধ করে জনগণের বিরাগভাজন হতে নারাজ রাজ্য সরকার।’
তিনি বলেন 'এবার শুধু পূজা হোক। উৎসব নয়। মা দুর্গার কাছে আসুন আমরা সবাই ভক্তিভরে করোনা থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করি।’
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব মেনেই মানুষ অংশ নেবেন দুর্গা পূজায়। বিজেপি অযথাই সবকিছুর মধ্যে রাজনীতির গন্ধ খোঁজার চেষ্টা করছে।‘
পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, রাজ্য প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই দুর্গা পূজা নিয়ে বেশ কিছু আচরণবিধি জারি করা হয়েছে। যেমন, পূজায় ঠাকুর দেখার সময় মাস্ক পড়তেই হবে। মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব। প্রতিটি মণ্ডপের বাইরে রাখতে হবে স্যানিটাইজার ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউ নর্মাল পরিস্থিতির মধ্যেই রয়েছে আরও ভয়ঙ্কর করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা। সম্প্রতি কেরালায় ওনাম উৎসব পালনের কারণ সে রাজ্যে করোনার মারাত্মক সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে ১৭ সেপ্টেম্বর তর্পনকে ঘিরে বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।
কলকাতার বিশিষ্ট চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘পূজায় লোকজনের ভিড় সামলাতে না পারলে, করোনার সুনামি হবে পশ্চিমবঙ্গে।’
চিকিৎসক কৌশিক লাহিড়ি বলেছেন, ‘ওনামের থেকে শিক্ষা নিতে হবে আমাদের। আমরা শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছি।’