বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান।
মস্কোতে টানা ১০ ঘন্টা আলোচনার পর স্থানীয় সময় শনিবার সকালে দেশ দুটি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সম্মত হয়েছে বলে জানান রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
তিনি জানান, শনিবার মধ্যরাত থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবিক বিবেচনায় দেশ দুটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদক বলেন, ‘দুই পক্ষ বন্দি বিনিময়ের বিষয়ে একমত ও দীর্ঘদিন ধরে চলমান যুদ্ধ সমাপ্তির লক্ষ্যে কার্যকর আলোচনায় ইচ্ছুক থাকলেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।’
দুই দেশের মধ্যে আলোচনার বিস্তারিত জানাননি রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আন্তঃসরকারি সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপের (ওএসসিই) মিন্সক গ্রুপ যুদ্ধবিরতির বিষয়টি মধ্যস্থতা করবে।
আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলেননি আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহরাব নেতসাকেনিয়ান ও আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেহান বায়রামোভ।
নাগোরনো-কারাবাখকে নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে কয়েক দশক ধরে যুদ্ধ চলছে। ২৭ সেপ্টেম্বর নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০০ জন নিহত হয়।
দেশ দুইটির সাম্প্রতিক সংঘর্ষ বৃহত্তর রূপ নিতে পারে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে । এ সংঘাতে আজারবাইজানের পক্ষে আছে ঘনিষ্ঠ মিত্র আঞ্চলিক পরাশক্তি তুরস্ক। অন্যদিকে প্রতিরক্ষা চুক্তি করা দেশ আর্মেনিয়ার সঙ্গে আছে বৈশ্বিক পরাশক্তি রাশিয়া।
আন্তর্জাতিক সংস্থা কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের রাশিয়া ও ইউরেশিয়া কর্মসূচির জ্যেষ্ঠ ফেলো পল স্ট্রন্সকি বলেন, নাগোরনো-কারাবাখ সমস্যা নিরসন রাশিয়ার জন্য জটিল। সিরিয়া ও লিবিয়াকে নিয়ে এরই মধ্যে বিপরীতমুখী অবস্থানে আছে তুরস্ক। নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার হয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে তুরস্ক ও রাশিয়া।
নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত। কিন্তু আজারবাইজানের জনসংখ্যার বড় অংশ জাতিগতভাবে আর্মেনিয়ান। ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে তারা আর্মেনিয়ার সমর্থনে আজারবাইজানি শাসনের বিরোধিতা করে আসছে।