করোনা মহামারীর কারণে ছয় মাস বন্ধ রাখার পর অবশেষে আকাশপথ খুলতে যাচ্ছে সৌদি আরব। আগামীকাল (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশটিতে যাওয়া যাবে।
এই সিদ্ধান্ত বিশেষ করে বাংলাদেশি শ্রমিক যারা করোনার কারণে ছুটিতে দেশে এসে আটকা পড়েছিলেন, তাদের জন্য সুখবর। কারণ, তারা কাজে ফিরতে পারবেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। ১০ লাখের বেশি শ্রমিক এখন কাজ করে দেশটিতে।
সৌদি সরকার জানিয়েছে, যাদের বৈধ ভিসা আছে, বসবাসের অনুমতি ও কাজের অনুমতি আছে, তাদের সবাই এখন যেতে পারবে দেশটিতে।
তবে করোনার কারণে ওমরাহর ওপর নিষেধাজ্ঞা এখনো উঠে যায়নি। সৌদি সরকারের সূত্রের বরাত দিয়ে সৌদি গ্যাজেট জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে স্থল, নৌ ও আকাশপথে নিজ নাগরিকদের দেশ ছাড়া ও দেশে ফেরার ওপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি।
তবে যেসব প্রবাসীর বৈধ বহির্গমন ও ফের প্রবেশের ভিসা, ওয়ার্ক ভিসা, বসবাসের অনুমতি (ইকামা) আছে, তারা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সৌদিতে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সব ধরনের সতর্ক ব্যবস্থা ও প্রটোকল মেনে চলা এবং সৌদিতে প্রবেশের ৪৮ ঘণ্টা আগে করোনা নেগেটিভ আসা বিদেশিরা ভ্রমণ ভিসাও পাবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সৌদি প্রেস এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে করোনা মহামারী মোকাবিলায় সর্বশেষ নেওয়া ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আকাশপথ আংশিক চালুর এ সিদ্ধান্ত হয়।
ওই প্রতিবেদনে বেশ কিছু দেশে করোনার উচ্চ সংক্রমণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এ দেশগুলোর কয়েকটিতে দ্বিতীয় দফায় চলছে সংক্রমণ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সব ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার তারিখ ঘোষণা করা হবে পয়লা জানুয়ারির ৩০ দিন আগে। ভ্রমণের সময় যাত্রীদের এবং বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর ভ্রমণকারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে একটি সুপারিশমালা উপস্থাপন করতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে।
বিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিকে আকাশপথ বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। এতে দেশটিতে কাজ করা শ্রমশক্তির একটি বড় অংশই বিপাকে পড়ে। এই সিদ্ধান্তের আগে যারা নিজ দেশে ফিরেছিলেন, তারা আবার সৌদি আরবে যেতে পারছিলেন না। আর যারা নিজ দেশে যেতে চাইছিলেন, তারাও তা করতে পারছিলেন না।
সৌদি আরব আকাশপথ বন্ধ করায় ওমরাহও বন্ধ হয়ে যায়। সারা বিশ্ব থেকেই ধর্মীয় এই আনুষ্ঠানিকতার জন্য কয়েক লাখ মুসলমান প্রতি বছর দেশটিতে যায়। অবশ্য করোনার কারণে সে দেশের নাগরিকদেরও এই ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালনে বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়েছে।