পাকিস্তানে ‘মাঙ্কিপক্স’ ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ অবস্থায় এই রোগের সংক্রমণ নিয়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে হযরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের আগমনী চ্যানেলে সার্বক্ষণিক একটি চিকিৎসক দল নিয়োজিত রয়েছে।
শনিবার শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাঙ্কিপক্স বিষয়ে এয়ারলাইন্সগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে। মাঙ্কিপক্স লক্ষণযুক্ত কোনো যাত্রী থাকলে দ্রুত তা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানাতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশে আসার ২১ দিনের মধ্যে যাত্রীদের মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে ১০৬৫৫ নম্বরে কল করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন চালু
এদিকে ‘মাঙ্কিপক্স’ রোগের সংক্রমণ নিয়ে জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশে হটলাইন চালু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কারও মধ্যে মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুততম সময়ে সন্দেহভাজনদের ১৬২৬৩ ও ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমপক্স (মাঙ্কিপক্স) ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ। এতে বেদনাদায়ক ফুসকুড়ি, লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া এবং জ্বর হতে পারে।
মধ্য আফ্রিকার কঙ্গো, বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা, উগান্ডা, কেনিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কিপক্স। কারও শরীরে এর কোনো লক্ষ্মণ দেখা দিলে অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, অথবা সংক্রমিত দেশ ভ্রমণের ২১ দিনের মধ্যে এই লক্ষ্মণ দেখা দিলে ১৬২৬৩ বা ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করুন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতা জারি
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশ্বব্যাপী এমপক্স বিস্তারের ব্যাপারে জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, মাঙ্কিপক্স একপ্রকার সংক্রামক রোগ। এর উপসর্গ অনেকটা জ্বর বা ফ্লু’র মতো। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাস থেকেও অন্য কেউ এতে সংক্রমিত হতে পারে।
জানা গেছে, স্মলপক্স ভাইরাস শ্রেণির একটি ভাইরাস এই রোগের জন্য দায়ী। ভাইরাসটির দুটি রূপান্তরিত ধরন রয়েছে- ক্ল্যাড-১ (মধ্য আফ্রিকান) ও ক্ল্যাড-২ (পশ্চিম আফ্রিকান)। এই রোগে প্রতি একশ’ আক্রান্ত রোগীর মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়ে থাকে।
রোগটির বিভিন্ন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে- জ্বর, মাথাব্যথা, ঘেমে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির টান ও অবসাদ। প্রথম পর্যায়ে রোগীর জ্বর আসে, পাশাপশি শরীরে দেখা দেয় ফোসকা। অধিকাংশ ঘটনায় শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। পরে শরীরের অন্যান্য অংশে তা ছড়িয়ে পড়ে; বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের তলায়।
মাঙ্কিপক্স রোগের জন্য এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, স্মলপক্স বা জলবসন্তের জন্য ব্যবহৃত টিকা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর।