বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) ম্যাট ক্যানেল। বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তা করতে তার দেশের আগ্রহের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে তার দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ম্যাট ক্যানেল। স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার জানান, করোনা মহামারিতে বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো করেছে। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে সাত লাখ বাংলাদেশি রয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। অনেক শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে মেডিক্যাল বিষয়ে পড়ালেখা করতে যাচ্ছেন বলেও জানান ব্রিটিশ হাইকমিশনার।
এ সময় ব্রিটিশ হাইকমিশনার বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তা করতে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ হাই কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক গভীর। বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতেও ব্যাপক উন্নতি শুরু হয়েছে। করোনাকালেও বাংলাদেশে হাজার হাজার চিকিৎসক, নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে ৫ম স্থান এবং দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বাংলাদেশে এখন দরকার চিকিৎসক, নার্সদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেয়া।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কাছে চিকিৎসক নার্সদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট করার অনুরোধ জানালে ব্রিটিশ হাই কমিশনারের পক্ষ থেকে এটিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবেন তার সরকার বলে জানান ম্যাট ক্যানেল।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার উভয় দেশের চিকিৎসক, নার্সদের অধিক হারে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের কথা বলেন। একই সাথে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স পাঠানোর কথাও জানান তিনি।
আলোচনায় যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ আরও টেকনোলজিক্যাল সহায়তা বৃদ্ধি ও ভকেশনাল ট্রেনিং এর ব্যাপারেও কথা হয়। বাংলাদেশে যত্রতত্র এন্টিবায়োটিক এর ব্যবহার হ্রাস করা নিয়ে আরও কাজ করতে হবে বলে জানান ব্রিটিশ হাই কমিশনার। এন্টিবায়োটিক ব্যবহার হ্রাস করতে বহুমাত্রিক উদ্যোগ বাংলাদেশ হাতে নিয়েছে বলে এসময় ব্রিটিশ হাই কমিশনারকে আশ্বস্ত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
আগামী ১০ বছরে বিশ্বে কোভিডের মত আবারও কোনো প্যান্ডামিক চলে আসতে পারে বলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গবেষণা আরও বাড়ানো যায় কি না সে ব্যাপারে ভাবার পরামর্শ দেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার। উভয় দেশে ভ্যাকসিন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা, স্বাস্থ্যসেবার হার বৃদ্ধি করা, চিকিৎসক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ বিনিময় করা নিয়েও কথা বলেন তারা।