শীত পড়তেই শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে মেহেরপুরে। ফলে হাসপাতালে বেড়েই চলেছে রোগীর সংখ্যা। এরমধ্যেই একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার সকাল ৯টায় মেহেরপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার তা ছিল আরও কম, মাত্র ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঘন কুঁয়াশা আর মৃদু শৈত্য প্রবাহের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে এ জেলার সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত নানা রোগে। এতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে বাড়ছে মৌসুমী রোগীর চাপ। তীব্র শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও ব্যাহত হচ্ছে।
সরজমিনে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতাল রোগীতে কানায় কানায় পূর্ণ। বেডে জায়গা না পেয়ে অনেকে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাঁপানি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অ্যালার্জি, সর্দি-কাশিসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্তরা চিকিৎসা নিচ্ছেন সেখানে। এদের বড় অংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
শুক্রবার রাত দুইটার সময় দেখা যায়, এ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৫ নবজাতকের পাশাপাশি চিকিৎসাধীন রয়েছে ৬২ শিশু। এদের প্রায় সকলেই শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় ভুগছে। এ ছাড়া থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত একটি শিশুও সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ৬৩ জন রোগীর মধ্যে ৪০ জনই শীতজনিত নানা সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি ৬৬ রোগী চিকিৎসাধীন, পাশাপাশি নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৭ জন চিকিৎসাধীন, এদের মধ্যে শিশু ১২, মহিলা ৪ ও পুরুষ একজন।
এ ছাড়া হাসপাতালের এইচডিইউতে চার ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। আইসিইউতে বর্তমানে ৩ জন ডেঙ্গু ও নিউমোনিয়ার রোগী রয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালে কর্তব্যরত আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. মনজুরুল আহসান বলেন, ‘শুক্রবার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে মোট ১৫১ জন রোগী চিকিৎসা নিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে ৬০ জন এসেছিলেন ঠান্ডাজনিত নানা রোগের উপসর্গ নিয়ে।’
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জামির মো. হাসিবুস সাত্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে এখানে ভর্তি রয়েছেন ২৩৭ জন রোগী। অন্যান্য রোগীর চাপ কম থাকলেও ক্রমান্বয়ে ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডাইরিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে মূলত লোকবল রয়েছে ১০০ রোগীর জন্য। এই লোকবল নিয়েই আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবছরই শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। তবে রোগীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান জনবল দিয়েই সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।’