ফিজিওথেরাপি চিকিৎসককে নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. হাবিবুল আহসান তালুকদারের ‘আপত্তিকর ও অপমানজনক’ মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফিজিক্যাল থেরাপি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি ডা. প্রদীপ কুমার সাহা।
তিনি অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকালে রাজধানীর ডিপিআরসি হাসপাতালে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের হয়রানির উদ্দেশে ডা. সফিউল্লাহ প্রধানকে ডাক্তার পদবি ব্যবহার নিয়ে অসম্মানজনক মন্তব্য করেন, যা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়। এতে ফিজিওথেরাপি পেশাজীবীদের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকরা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ডাক্তার পদবি ব্যবহার করছেন। পরিচালকের বক্তব্যে হাইকোর্ট বিভাগকে অবমাননা করা হয়েছে।
ডা. প্রদীপ কুমার সাহা উল্লেখ করেন, ২০০৮ সাল থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অস্থায়ী ফিজিওথেরাপিস্ট নিবন্ধন কার্যালয় থেকে স্বীকৃত ফিজিওথেরাপিস্টদের ‘ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পেশাদার’ হিসেবে অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশন সনদ প্রদান করে।
২০১১ সালের ২৭ নভেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে পরিচালক প্রশাসন থেকে বাংলাদেশের সব সিভিল সার্জনকে চিঠি দেয়া হয়, যাতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের পেশাগত কাজে হয়রানি করা না হয়, যা সব জেলা প্রশাসককে অবহিত করতে বলা হয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০১২ সালের ৪ জানুয়ারি বিএমডিসি আইন ২০১০-এর বিরুদ্ধে রিট আবেদন করলে হাইকোর্ট বিভাগ স্বীকৃত ফিজিওথেরাপিস্টদের নামের আগে ডাক্তার পদবি লিখে পেশাগত দায়িত্ব পালনে যাতে যেকোনো আইনগত সংস্থা থেকে হয়রানি করা না হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকসহ সব রিহ্যাবিলিটেশন প্র্যাকটিশনারদের নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন-২০১৮ নামে একটি আইন পাস হয়।
প্রদীপ কুমার সাহা জানান, জাতীয় সংসদে পাসকৃত ফিজিওথেরাপিস্টসহ অন্যান্য রিহ্যাবিলিটেশন প্র্যাকটিশনার ও রিহ্যাবিলিটেশন পেশাজীবীদের জন্য গঠিত বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন-২০১৮ অনুযায়ী পরিচালিত হবে, বিএমডিসি অ্যাক্ট-২০১০ দিয়ে নয়। অথচ প্রায় সময়ই বিএমডিসি অ্যাক্ট-২০১০ এর ক্ষমতাবলে ফিজিওথেরাপিস্টদের হয়রানি করা হয়।
তিনি রিহ্যাবিলিটেশন প্র্যাকটিশনার ও ফিজিওথেরাপিস্টদের হয়রানি করা যেন না হয়, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিপিএর মহাসচিব ডা. তৌহিদুজ্জামান লিটু, সহসভাপতি ডা. আরিফ জোবায়ের, সহসভাপতি ডা. মহসীন কবির লিমন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওথেরাপিস্ট ডা. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান এবং বিপিএর সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আলাউদ্দিন।