রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র হাসপাতালে ভাংচুরের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। সোমবার রাতে কর্মবিরতি ঘোষণার পরপরই হাসপাতালের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রয়েছেন সব ইন্টার্ন চিকিৎসক। এতে ব্যাহত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম।
জানা যায়, সোমবার বিকেলে হাসপাতালের ৩৫ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক রোগী মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের কথা কাটাকাটি হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অভিযোগ, রোগীর স্বজনরা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্সদের হেনস্তা করেন। এসময় চিকিৎসকরা দৌড়ে পাশের ওয়ার্ডে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এরপর রোগীর স্বজনরা ওয়ার্ডের ভেতরে চিকিৎসক ও নার্সের কক্ষে ভাংচুর চালান।
ওই হাসপাতালে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. মো. মোস্কাকিম বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। রোগীর স্বজনরা মৃত্যু মেনে নিতে পারেন না। তারা ডাক্তারদের ওপর হামলা ও হাসপাতালে ভাংচুর চালান। এভাবে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।’
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতে বৈঠক করে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেয় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মো. রাকিব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত মজুমদার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, মারা যাওয়া রোগীর স্বজনরা দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ক্রমাগত ভীতি প্রদর্শন, হুইক প্রদান এবং শারীরিক হেনস্তা করার চেষ্টা করে। এরপর হাসপাতালে ভাংচুর চালায়। এ ঘটনা প্রমাণ করে হাসপাতালে চিকিৎসকদের কোনো সুস্থ কর্মপরিবেশ নেই। এ অবস্থায় হাসপাতালের ইন্টার্ন ডাক্তারদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং দোষীদের বিচারের দাবিতে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেয়া হলো।
ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুল হক ভূঞা বলেন, ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টার্ন চিকিৎকরা ধর্মঘট ডেকেছেন। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা হবে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তায়ও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
হেনস্তা ও ভাংচুরের অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে মারা যাওয়া রোগীর স্বজনদের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।