নওগাঁয় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। চলতি মৌসুমে জেলায় ১০১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় নওগাঁ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় পৃথক দুটি ডেঙ্গু ইউনিট করা হয়েছে। আর জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
জেলা সির্ভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান শাখা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুন মাস থেকে এ পর্যন্ত মোট ১০১ জন ডেঙ্গু পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে ৫৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।
এছাড়া ২৪ ঘণ্টা জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৭ জন। তাদের মধ্যে জেনারেল হাসপাতালে সাতজন ভর্তি রয়েছেন।
জেলায় ডেঙ্গু পজিটিভ শনাক্ত হওয়া রোগীদের বেশিরভাগই ঢাকা ফেরত বলে জানা গেছে। আক্রান্তরা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে এখন পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কেউ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
নওগাঁ সদরের বাসিন্দা মশিউর রহমান ঢাকায় রিকশা চালাতেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় থাকার সময় হঠাৎ করে তিনি শরীরে জ্বর অনুভব করেন। স্থানীয়ভাবে কিছুদিন চিকিৎসা নেন। কিন্তু প্রতিকার না পেয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন।
তিনি বলেন, ‘বাড়ি আসার পরও জ্বরের তীব্রতা বাড়তে থাকে। দুই দিন আগে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। পরীক্ষার পর শরীরে ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। চিকিৎসা চলছে। এখন কিছুটা সুস্থ। হাসপাতাল থেকেই ওষুধ দেয়া হচ্ছে।’
সদর উপজেলার হাঁপানিয়া গ্রামের সোহান হোসেন রেলওয়েতে চাকরি করেন। কর্মস্থল ঢাকায় থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে একদিন জ্বর আসে এবং শরীর ব্যথা করে। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হন। এরপর ১৫ দিন সেখানে ডিউটি করেন।
সোহান বলেন, ‘আট দিনের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি এসেছি। বাড়ি আসার ৫ দিন পর শরীরে আবার জ্বর অনুভব হয়। গ্রাম্য চিকিৎসককে দেখালে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। প্রতিকার না হওয়ায় অবশেষে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।’
জেলা সির্ভিল সার্জন ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সচিবালয় থেকে আমাদের কিছু দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। জ্বরের কোনো রোগী হাসপাতালে এলে প্রথমেই তার ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বাড়ির আশপাশে ঝোঁপ-ঝাড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ পরিত্যক্ত কোনো পাত্রে ও ফুলের টব বা ডাবের খোসায় পানি জমে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নির্মূলে লিফলেট বিতরণ করে প্রচার চালানো হচ্ছে। এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন মসজিদে মুসল্লিদের সচেতন করা হচ্ছে।’