সরকারের কাছে পাওনা সংক্রান্ত জটিলতায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধের ঘোষণা স্থগিত করেছে স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সার্ভিস বাংলাদেশ (প্রা.) লিমিটেড। সে সুবাদে বৃহস্পতিবার থেকেও এখানে স্বল্প মূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে।
বুধবার রাত ৯টায় সেবা বন্ধের ঘোষণা স্থগিত করে নোটিশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান। তিনি বলেন, ‘চটগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বল্প মূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা থেকে সরে এসেছে তারা৷ রাত ৯টায় এটা স্থগিত করে নোটিশ দেয়া হয়েছে। এতে কাল আর বন্ধ হচ্ছে না; স্বাভাবিকভাবে ডায়ালাইসিস কার্যক্রম চলবে।’
দীর্ঘদিন ধরে পাওনা পরিশোধ না করায় এর আগে বুধবার এক নোটিশে স্বল্প মূল্যের ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধের ঘোষণা দেয় স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সার্ভিস বাংলাদেশ (প্রা.) লিমিটেড।
নোটিশে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে পাওনা আদায়ে বার বার ধর্না দিয়েও কাজ হয়নি। অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) কর্তৃক সার্ভিস পেমেন্ট পরিশোধে বার বার বিলম্ব করা হচ্ছে। এজন্য তারা সরাসরি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) ফরিদা ইয়াসমিনকে দায়ী করেছেন। নোটিশে তার নাম ও ফোন নম্বর উল্লেখ করে সেবা বন্ধ বা চালুর ব্যাপারে জানতে যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেবা প্রদান সম্ভব নয়। এজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেবা চালু রাখার অনুরোধ জানান তারা।
সরকারের সঙ্গে পিপির আওতায় স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সার্ভিস নামের ভারতীয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা দিয়ে থাকে। প্রতি ডায়ালাইসিসে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ এলেও সরকারি ভতুর্কিতে এই সেবা স্বল্প মূল্যে পেয়ে থাকেন সাধারণ রোগীরা।
সাধারণত প্রতিদিন ১০০ রোগী ডায়ালাইসিস সেবা নিতে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে আসেন। একজন রোগীকে প্রতি সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস করতে হয়। মাসে একজন রোগীকে ৮ বার এই সেবা নিতে হয়। বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ এই সেবা বন্ধ ঘোষণা করায় ভোগান্তিতে পড়ে যান সেবাপ্রার্থীরা।
নানা জটিলতায় গেল দুই বছরে চমেক হাসপাতালে বেশ কয়েকবার বন্ধ হয়েছে ডায়ালাইসিস সেবা। এর মধ্যে গত জানুয়ারিতে ডায়ালাইসিস সেবার মূল্য বৃদ্ধি হলে আন্দোলনে নামেন রোগীর স্বজনরা। সেই আন্দোলনে পুলিশি হামলার ঘটনাও ঘটে।