দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষ থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন। পুরুষদের তুলনায় নারীরা এই সমস্যায় পড়েছেন চার থেকে পাঁচ গুণ।
বুধবার রাজধানীতে অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড্রোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অফ বাংলাদেশ (এসিইডিবি) আয়োজিত বিশ্ব থাইরয়েড দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এসিইডিবির অফিসে সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. এম এ হালিম খান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, থাইরয়েড রোগীর অর্ধেকের বেশি মানুষ জানেন না যে তারা এ সমস্যায় ভুগছেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ বলেন, বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ থাইরয়েড সমস্যা। তাই গর্ভধারণ সংক্রান্ত সমস্যা হলে গাইনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শের পাশাপাশি থাইরয়েডের চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিৎ। তা না হলে নবজাতকের মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় শিশু অস্বাভাবিক হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে গর্ভবতী অবস্থায় ও প্রসবের আগে থাইরয়েড পরীক্ষা জরুরি।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক আতিকুর রহমান বলেন, সাধারণত আয়োডিনের অভাবে গলাফুলা রোগ হয়ে থাকে, যাকে সাধারণ ভাষায় ঘ্যাগ রোগ বলা হয়।
বাংলাদেশে আয়োডিন যুক্ত লবণ খাওয়া হলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দেশের বেশিরভাগ স্কুলগামী শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের আয়োডিনের অভাব রয়েছে। আয়োডিন শরীরে খুব প্রয়োজনীয় থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অনুষ্ঠানে থাইরয়েড বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, থাইরয়েডের বিষয়ে সচেতনতা জরুরি। থাইরয়েডের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় অনেকে দেরিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ না জেনেই অনেকের পরামর্শে পরামর্শে ওষুধ খান। এতে অনেক সময় ভুল ওষুধ খাচ্ছেন। এতে রোগের জটিলতা বাড়ছে।
থাইরয়েডের প্রকারভেদ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, হাইপো থাইরয়েড হলে, অল্প খাবার খেয়েও মানুষের ওজন বেড়ে যাবে, শরীর দুর্বল লাগবে। এসব রোগীদর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়, নারীদের ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত মাসিকের সমস্যা হয়। অপরদিকে হাইপার থাইরয়েডের ক্ষেত্রে তার বিপরীত লক্ষণ দেখা যায়। এর চিকিৎসাও আলাদা হবে।