বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অনুমতি ছাড়া স্কুল-কলেজে ভ্যাকসিনেশন নয়

  •    
  • ২০ মার্চ, ২০২৩ ২১:২২

শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৬ হাজার নারীকে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন দেয়ার খবর প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। চিঠিতে ঔষধ প্রশাসন বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পূর্বানুমতি ছাড়া এ ধরনের ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম স্কুল-কলেজে না চালাতে অনুরোধ করা হয়েছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া স্কুল-কলেজে ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম আয়োজন থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এক চিঠিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এই ‘বিশেষ অনুরোধ’ জানানো হয়েছে।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৬ হাজার নারীকে জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন দেয়ার খবর প্রকাশের পর ১৯ মার্চ চিঠিটি দেয়া হয়। এর আগের দিন অভিযান চালিয়ে রাজধানীর দারুসসালামে ডা. এ আর খান ফাউন্ডেশন থেকে নকল ভ্যাকসিনের আলামত উদ্ধার করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ স্বাক্ষরিত চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে সব জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সব জেলার ঔষধ প্রশাসনকে।

তাতে বলা হয়েছে, সেরাভিক্স ভ্যাকসিন নকল পাওয়া গেছে। আন-রেজিস্টার্ড হেপাটাইটিস-বি’র ভ্যাকসিনের ভায়াল থেকে খালি ভায়ালে আংশিক ভরে সেরাভিক্স ভ্যাকসিনের লেবেল লাগিয়ে একটি চক্র নকল করছে।

গত ১৮ মার্চ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর দারুসসালামের ডা. এ আর খান ফাউন্ডেশন থেকে নকল ভ্যাকসিনের আলামত পেয়েছে। গাজীপুর জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজে নকল ভ্যাকসিনের প্রচারণা করা হয়েছে।

চিঠিতে বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়েছে, স্কুল-কলেজ ও বেসরকারি পর্যায়ে কোনো ধরনের ভ্যাকসিনেশন করতে হলে এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পূর্বানুমোদন থাকা আবশ্যক। ঔষধ প্রশাসন বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পূর্বানুমতি ছাড়া এ ধরনের ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম স্কুল-কলেজে না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৮ মার্চ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর দারুস সালাামের ডা. এ আর খান ফাউন্ডেশনে অভিযান চালিয়ে নকল ভ্যাকসিনের আলামত পেয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে অধিদপ্তর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গত কয়েকদিনে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছি। কিছু সন্দেহভাজন প্রতিষ্ঠান নকল ভ্যাকসিন উদ্ধারের খবর পেয়ে সতর্ক হয়ে গেছে।

‘আমরা এখন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের অভিযান চলাকালেও এ ধরনের মাইকিং শুনতে পেয়ে ধাওয়া করেছিলাম। কিন্তু তারা পালিয়ে যায়।’

গত ১৫ মার্চ নকল ভ্যাকসিন তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সাইফুল ইসলাম শিপন, ফয়সাল আহম্মেদ, আল আমিন, নুরুজ্জামান সাগর ও আতিকুল ইসলাম নামে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের প্রত্যেককে দুইদিন করে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।

তিন বছর ধরে জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্স বাংলাদেশে আমদানি বন্ধ রয়েছে। আর এটাকে সুযোগ হিসিবে কাজে লাগায় প্রতারক চক্রটি। হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিনের একটি অ্যাম্পুল খুলে অন্তত ১০টি জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন বানিয়ে বিক্রি করছে চক্রটি।

গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের বরাত দিয়ে ডিবি তেজগাঁও বিভাগের গোয়েন্দারা জানান, চোরাইপথে ভারত থেকে এই ভ্যাকসিন আনতে অ্যাম্পুল প্রতি খরচ হয় ৩৫০ টাকা। একটি অ্যাম্পুল খুলে ১০টি অ্যাম্পুল বানানো হয়। পরে সেগুলোতে লাগিয়ে দেয়া হয় জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্সের লেবেল।

লেভেল লাগানোর পর জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্সের প্রতিটি অ্যাম্পুল বিক্রি করা হয় আড়াই হাজার টাকা করে। গাজীপুরের প্রায় ৬ হাজার নারীর কাছে জনপ্রতি তিনটি করে ১৮ হাজার অ্যাম্পুল ভ্যাকসিন বিক্রি করে চক্রের সদস্যরা। এর মাধ্যমে তারা হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা।

পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকা ও আশপাশের প্রায় ১৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প করে নকল টিকা বিক্রির তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী, শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের কাছে নকল ভ্যাকসিনের তিনটি করে ডোজ বিক্রি করেছে ওই প্রতারক চক্র।

নকল ভ্যাকসিন তৈরির কারখানা মালিক গ্রেপ্তার

নকল ভ্যাকসিন তৈরির কারখানা মালিক হিমেলকে রোববার গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও গোয়েন্দা বিভাগ। তাকে দু’দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। এর আগে নকল ভ্যাকসিন তৈরি ও বিক্রির অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।

গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. গোলাম সবুর বলেন, ‘কারখানা মালিক হিমেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই নকল ভ্যাকসিন তৈরি ও বিপণনে জড়িত অন্যদের বিষয়ে জানা সম্ভব হবে বলে মনে করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর